মোটরসাইকেলের তেল সাশ্রয়ের টিপস

স্পার্ক প্লাগ পরিস্কার রাখুন
মোটর সাইকেলের ইঞ্জিনের জ্বালানির দহনের জন্য বৈদ্যুতিক সিস্টেম থেকে স্পার্ক তৈরি করে। এই স্পার্ক জ্বালানি পোড়ায়। এতে করে ইঞ্জিনের ভেতরের কম্পার্টমেন্ট ঘূর্ণন তৈরি হয়। প্রায়শই দেখা যায় প্লাগের কারণে মোটর সাইকেল বন্ধ হয়ে যায়। প্লাগে ময়লা জমলে এটা হয়। এজন্য নিয়মিত প্লাগ পরিস্কার রাখুন। এতে যেমন আপনার মোটর সাইকেল বন্ধ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবে তেমনি জ্বালানির সাশ্রয় হবে।
কার্বুরেটর পরিস্কার রাখুন
মোটরসাইকেলে কার্বুরেটর হল সেই যন্ত্র যা একটি অন্তঃদহ ইঞ্জিনে বায়ু ও জ্বালানীর মিশ্রণ ঘটায়। কার্বুরেটর বায়ু চাপের পার্থক্যের উপর নির্ভর করে এর প্রধান কাজ অর্থাৎ বায়ু ও জ্বালানীর মিশ্রণ ঘটানো। এই কার্বুরেটরে ময়লা জমলে ইঞ্জিনে তেল বেশি দহন হয়। ফলে জ্বালানির খরচটাও বেড়ে যায়। এই সমস্যার সমাধানে নিয়মিত দক্ষ মেকানিকের মাধ্যমে কার্বুরেটর পরিস্কার করুন।
সঠিক নিয়মে বাইক চালান
সঠিক নিয়মে মোটর সাইকেল চালালে জ্বালানি খরচ অনেকটাই কমে যায়। মোটর সাইকেল যত নিচের গিয়ারে চালাবেন ততই তেল বেশি পুড়বে। এজন্য বাইক স্টার্ট করার পর গতি বাড়িয়ে যথাসম্ভব টপ গিয়ারে রাখুন। এতে জ্বালানি খরচ কম হবে। বাইক পাহাড় সেতু কিংবা উুঁচস্থানে ওঠার সময় ইঞ্জিনের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করে। ফলে জ্বালানীর অপচয় হয় । যখন বাইক বেশি গিয়ারের জন্য প্রস্তুত হবে যত দ্রুত সম্ভব বেশি গিয়ার ব্যবহার করুন।
ধীরেসুস্থে বাইক চালান
বাইক স্টার্ট করলেই তেল খরচ হতে শুরু করে। আবার টপ গিয়ার থেকে ফাস্ট গিয়ারে আনলেও জ্বালানি খরচ বেশি হয়। এজন্য যথাসম্ভব একই গতিতে বাইক চালান। একে বলে মডারেট স্পীড। মোটর বাইকের স্পিডো মিটারে ইকোনমি স্পীড দেয়া আছে। এই ইকোনমি স্পীডে বাইক চালালে জ্বালানি খরচ কম হয়। রাস্তায় জ্যামে পড়লে ইঞ্জিন বন্ধ করে রাখুন। এতে জ্বালানি খরচ কমবে।
আস্তে আস্তে গতি তুলুন
মোটর বাইকের ইঞ্জিন যত ঘুরবে ততই পেট্রোল পুড়বে। তাই ইঞ্জিন স্টার্ট দিয়ে প্রথমে কিছু দূর ফাস্ট গিয়ারে চালান। তারপর গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটা একটা করে গিয়ার পরিবর্তন করুন। হুটহাট গিয়ার পরিবর্তন করবেন না। এতে যেমন বাইকের ইঞ্জিনের সমস্যা হবে তেমনি তেলও পুড়বে বেশি।
গতি কমান, জ্বালানি বাঁচান
মনে রাখবেন বাইকের গতি যত বাড়াবেন ততই জ্বালানি পুড়বে। তাই গতি সব সময় মডারেটে রাখুন। সবচেয়ে ভালো হয় ৩০ থেকে ৫০ কিলোমিটারে গতিতে গাড়ি চালানো। এ সময় গিয়ার রাখুন টপে। এতে করে জ্বালানি খরচ কমবে।
নিয়মিত বাইক পরীক্ষা করুন
নিয়মিত বাইক চেকআপ করালে জ্বালানি খরচ কমানো সম্ভব। বিশেষ করে ঘর থেকে বাইক নিয়ে বের হওয়ার সময়ই এটির ইঞ্জিনের শব্দ পরীক্ষা করুন।ইঞ্জিনের শব্দে কোনো গড়মিল থাকলে সময় নিয়ে তা খেয়াল করুন। এছাড়া, কাবুরেটর, প্লাগ, ব্যাটারি এবং ক্ল্যাচ অ্যাডজাস্ট করুন। কয়েকদিন পরপর চাকার হাওয়া পরীক্ষা করুন। চাকায় বাতাসের চাপ কম হলে ইঞ্জিন বেশি তেল পোড়ায়।
সময়মত ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তন করুন
মোটর বাইক নতুন হলে প্রথম ৫০০ কিলোমিটার চালিয়ে ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তন করুন। এরপর প্রতি ১ হাজার কিলোমিটার চালিয়ে ওয়েল পরিবর্তন করুন। এতে করে গাড়ির শব্দ হবে মসৃণ এবং জ্বালানিও কম পুড়বে।
নিয়মিত টায়ারের চাপ পরীক্ষা করুন
প্রতি মাসে অন্তত একবার এবং দীর্ঘ ভ্রমণের পূর্বে টায়ারের চাপ পরীক্ষা করুন । কম চাপের টায়ার শুধুমাত্র বিপদজনক নয় এটা আপনার জ্বালানীর ব্যবহারও বাড়াবে । যখন টায়ারের চাপ পরীক্ষা করা হবে তখন এর ফোলা অংশের গভীরতাও মাপা উচিত এটা জানার জন্য যে এগুলো আইনত উপযোগী।
কম ওজন নিয়ে ভ্রমণ করুন
বাইক যত বেশী ওজন বহন করবে তত বেশী জ্বালানী ব্যবহার করবে । আপনার বাইককে গাড়ির মতো ব্যবহার করবেন না এবং দুই জনের বেশী যাত্রী বহন করবেন না।
নির্ভেজাল জ্বালানি ব্যবহার করুন
ভেজালযুক্ত জ্বালানি মানেই বহুমুখি সমস্যা। জ্বালানি খরচ বাড়বে, ইনজিন উত্তপ্ত হবে। প্লাগ, রিংপিস্টন ইত্যাদি নষ্ট হবে। কাজেই বিশ্বস্ত জায়গা থেকে পেট্রোল নিন।
নিয়মিত সার্ভিসিং করুন
নির্দিষ্ট সময় পরপর বাইকের সার্ভিসিং করুন। বাইকের অনুমোদিত সার্ভিসিং সেন্টার অথবা মানসম্মত সার্ভিসিং সেন্টার থেকে বাইক সার্ভিসিং করান। এতে বাইকের জ্বালানি খরচ যেমন কমবে তেমনি বাইক দীর্ঘস্থায়ী হবে।