মোটরসাইকেলে এক্সিডেন্ট প্রতিরোধের উপায়
মোটরসাইকেল নয়, এটি মরন সাইকেল। অনেকেই মোটরসাইকেলকে এভাবেই দেখে থাকেন। মোটরসাইকেল চালাবে অথচ একসিডেন্ট হবে না এটি প্রায় অসম্ভব একটি বিষয়। কখনও নিজের দোষে, কখনও অপরের দোষে একসিডেন্ট হয়ে থাকে। দোষ যার হোক হোক ঘটনার পরিমান হয়তো কিছু কমানো যেতে পারে বা ক্ষতির পরিমান কমানো যেতে পারে যদি আমরা কিছু বিষযে সতর্ক হই। তেমনি কিছু বিষয়-
যাত্রা শুরু হোক নিরাপদে
বাইক স্টার্টের পূর্বেই তেল, ব্রেক, লাইট, চেন, চাকার পাম্প ইত্যাদি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে ভ্রমন শুরু করুন।সাইড স্ট্যান্ড তুলে নিন চাকা ঘোরানোর আগেই। হেলমেট, জুতা, গ্লাভস ইত্যাদি অবশ্যই ব্যবহার করুন।
গতি থাকুক সীমিত
পিকআপ দিলেই বাইকের স্পীড বাড়ে, কাজেই বেশি স্পীডে বাইক চালানো চালকের ক্রেডিট নয়, বাইকের ক্রেডিট। নিরাপদে বাইক চালানো চালকের ক্রেডিট। বাইকের সর্বোচ্চ গতি নয় বরং আপনি নিয়ন্ত্রন করতে পারেন এমন গতিতেই বাইক চালান।
আচমকা কড়া ব্রেক করবেন না
বিপদ থেকে বাচতেই ব্রেকের প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু যদি সেটি হয় আচমকা এবং কড়া ব্রেক, তাহলে সেটি বিপদের পরিমান আরো বাড়িয়ে দেয়।মাঝারি গতিতেই আচমকা কড়া ব্রেকে চাকা পিছলে পড়া সম্ভবনা বহুগুন।
সর্তক থাকুন কাদা, বালি ও তেল
রাস্তার উপরে পড়ে থাকা তেল, বালি বা কাদাময় রাস্তায় বাইক চালানো খুবই ঝুকপূর্ন। সম্ভব হলে এমন রাস্তা এড়িয়ে চলুন। না হলে সর্বোচ্চ সতর্কতায় বাইক চালান।
বৃদ্ধ, শিশু, নারী ও পশু থেকে সতর্ক থাকুন
রাস্তার পাশে পারাপারের অবস্থায় বৃদ্ধ, শিশু অথবা নারী দেখলে বাইকের স্পীড কমিয়ে নিন। আর রাস্তার উপরে বা পাশে পশু-পাখি থাকলে স্পীড কমিয়ে সতর্ক অবস্থায় সে অংশ পার হউন।
সাইড রোড হতে সতর্ক থাকুন
হাইওয়েতে চলার সময় সাইডরোড গুলো সতর্কতার সাথে পাড়ি দিন। অনক সময়েই এইসব রাস্তা থেকে সাইকেল, গাড়ি, রিকশা ইত্যাদি আচমকা মেইন রাস্তায় ঢুকে পড়ে এবং একসিডেন্ট ঘটায়।
রাস্তার বাঁকগুলো মৃত্যু ফাদ
রাস্তার বাঁকগুলোতেই একসিডেন্ট ঘটে বেশি। যেকোন মোড়ে স্পীড কমিয়ে সতর্কতার সাথে পার হোন। রাস্তায় বাক নেবার সময় ব্রেক করবেন না। পিছলে পড়ে যাবার সম্ভবনা ব্যাপক। বাঁকে কখনই ওভার টেকিং করবেন না। এই জায়গা গুলোতে কারো পক্ষেই সামনে ভালো মতো দেখার সুযোগ হয়ে ওঠে না।
নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখুন
সকল গাড়ীর নিয়ন্ত্রন এক রকম নয়। বাস-কার ইত্যাদি সাধারন বাইকের তুলনায় দ্রুত গাড়ি থামাতে পারে। কাজেই এইসকল গাড়ীর একেবারে পেছনে না থেকে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে পেছনে থাকুন।
লেন পরিবর্তন বা বাঁক নিতে সিগন্যাল দিন
লেন পরিবর্তন করতে বা রাস্তায় বাঁক নিতে সিগন্যাল দিন এবং অবশ্যই লুকিং মিররে পেছনে দেশে নিশ্চিত হয়ে তবেই বাঁক নিন।
শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে ওভারটেক করবেন না
অতি গতি পরিহার করুন। কোনো গাড়ীকে ওভারটেক করতে হলে নিয়ম মেনে তাকে সিগন্যাল দিন এবং সামনে থেকে কোনো গাড়ি না আসলে এবং ডানে পর্যাপ্ত জায়গা থাকলে তবেই ওভারটেক করুন। রাস্তার বাঁকে কখনই ওভারটেক করবেন না।
ব্রেক, টায়ার ও টিউব সঠিক সময়ের কিছু আগেই পরিবর্তন করুন
এই বিষয়ে অলসতা নয় বরং সময়ের কিছু আগেই ব্রেক সু, টায়ার এবং টিউব পরিবর্তন করুন। বর্ষার রাস্তা পিচ্ছিল থাকে তাই ভালো গ্রীপ পেতে টায়ারের হাওয়া সামান্য কমিয়ে রাখতে পারেন।
সর্তক থাকুন স্পীড ব্রেকারে
বাংলাদেশের অধিকাংশ স্পীড ব্রেকারগুলোই রং করা থাকে না, অপরিচিত রাস্তায় স্পীড ব্রেকারগুলো খুবই ঝুকিপূর্ন। কাজেই অপরিচিত রাস্তায় সতর্ক যেমন থাকবেন তেমনি আচমকা স্পীড ব্রেকারের সামনে পড়ে গেলে যতটুকু সম্ভব গতি কমিয়ে ফেলুন গতি সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রনে আনতে না পারলে হ্যান্ডেল শক্ত এবং সোজা করে ধরুন, পাদানির উপরে ভর দিয়ে গাড়ীর সীট থেকে দেহকে সামান্য তুলে ধরুন। গাড়ী লাফ দিলেও পড়ে যাবার সম্ভবনা কম। বরং আচমকা কড়া ব্রেক করে পিছলে একসিডেন্ট ঘটার সম্ভবনাই বেশি।
ব্লাইন্ড স্পটে থাকবেন না
বাস-ট্রাক-লরি ইত্যাদি জাতীয় বড় গাড়ির কিছু জায়গা থাকে যেখানে ড্রাইভারের পক্ষে দেখা সম্ভব হয না। এসব জায়গা এড়িয়ে চলুন। সব সময়েই অন্য গাড়ীর চালকের দৃষ্টির মধ্যেই থাকুন। নিরাপদে থাকবেন।
নিরাপদে থাকুন, সুস্থ থাকুন।