মোটরবাইক চালানোর কিছু গুরুত্বপুর্ন নির্দেশনা
আমরা যখনই গতি এবং ফ্যাশনের কথা চিন্তা করি অথবা দুইটা একসাথে সেক্ষেত্রে একটা প্রতিছবি আমাদের মনে ভেসে উঠে এবং তা হলো একটা মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেল হলো পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় দুইচাকার বাহনগুলার মধ্যে একটি। আমাদের দেশে মোটরসাইকেলের ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিশেষত চাকুরিজীবী, তরুন প্রজন্মের কাছে এবং সাধারন প্রয়োজনে ব্যবহার করা মানুষ তো আছেই। আমাদের দেশের তরুনরা মোটরসাইকেলের ব্যাপারে অনেকাংশে আবেগী। তরুনদের বেশিরভাগই মোটরসাইকেল চালানোর সময় তাদের ইচ্ছা বা স্বাধীনতায় বেশি খেয়ালী আর এই কারনে বাইক দুর্ঘঠনায় দেখা যায় তরুনড়াই বেশি দুর্ঘঠনার শিকার। তাই তরুন বাইকারসহ অন্যান্য সকল বয়সী বাইকারের বাইক চালানোর সময় কিছু বিষয় জানা খুব গুরুত্বপুর্ন বিশেষত নিরাপদে বাইক চালানোর স্বার্থে।
নিম্নে বাইক চালানো সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপুর্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হলোঃ
১। হেলমেটঃ মোটরসাইকেলের গিয়ার আর এক্সেসরিজের মধ্যে হেলমেট হলো অন্যতম গুরুত্বপুর্ন একটি। এটা আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন অংশ মাথাকে সুরক্ষা দেয় আর হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানোটা আমাদের দেশে আইনত দন্ডনীয়। আমাদের দেশের আইন অনুসারে হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালালে বেশ বড় অংকের আর্থিক জরিমানা করা হয়ে থাকে।
২। কন্ট্রোলঃ আপনার বাইকের নিরাপত্তা অনেকাংশে আপনার কন্ট্রোল করার সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে। আপনার উচিত আপনার বাইকটাকে সেই গতি এবং স্টাইলে রাইড করা যা আপনি নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন। এটা যদি সবাই করে তাহলে মোটরসাইকেল দুর্ঘঠনা অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
৩।মোবাইলে কথা বলাঃ মোবাইল বর্তমানে আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা অনেক সময় খেয়াল করি যে কিছু মানুষ মোটরসাইকেল চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলেন যা সমুহ বিপদের কারনের মধ্যে একটি। এটা আপনার মনযোগ নষ্ট করতে পারে আর আপনি আপনার বাইকের নিয়ন্ত্রন হারাতে পারেন। তাই চেষ্টা করুন ওয়ারলেস হেডফোন বা ব্লুটুথ হেডফোন ব্যবহার করার যদি কথা বলাটা খুব বেশিই জরুরী হয়ে থাকে।
৪। প্রতিযোগীতাঃ পথেঘাঠে অনেক সময় চলতে গিয়ে আমরা দেখতে পায় যে একটি বাহন আরেকটি বাহনকে পার করে চলার প্রতিযোগিতায় লেগে যায় বিশেষত, তরুন প্রজন্মের মধ্যে এই প্রবনতা বেশি দেখা যায়। এইক্ষেত্রে যে সমস্যাটা আমরা বেশি দেখতে পায় তা হলো অতিরিক্ত গতি উঠিয়ে নিয়ন্ত্রন করতে না পারার কারনে দুর্ঘঠনার শিকার হয়ে প্রান হারানো বা পঙ্গুত্ব বরন। অথচ চাইলেই একটু ধৈর্য ধরে সময় নিয়ে পথ পাড়ি দিলে এই ধরনের দুর্ঘঠনা অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
৫। সহযাত্রীঃ এক বাইকে দুইজন ঠিক আছে কিন্তু যখনই ৩ জন তা প্রথমত বেআইনি তার ওপর নিয়ন্ত্রন হারানোর সম্ভাবনা তৈরি হয় অনেকাংশে কারন বাইকের পেছনের অংশের ওজন ভারী হয়ে যায়।
৬। টার্নিং: বাইক ধীরে চালান এবং ধীরে টার্নিং নেন কারন টার্নিং নেওয়ার সময় আমি বা আপনি সামনের অংশ পরিষ্কার দেখতে পায় না বেশিরভাগ সময়ই। তাই সম্ভাব্য দুর্ঘঠনা থেকে পরিত্রানের অংশ হিসেবে অবশ্যই টার্ণিং নেওয়ার সময় গতি কমিয়ে তারপর টার্নিং নিবো।
৭। আন্তরিক মনযোগঃ নিরাপদ ড্রাইভের জন্য এটা অনেক গুরুত্বপুর্ন। আমরা যখন রাস্তায় বাইক চালায় তখন আমাদের সাথেই অনেক ভারী ভারী যানবাহন চলে থাকে যার কারনে সামান্য অন্যমনস্ক হলে বিপদের আর কোন সীমা থাকে না এবং পরবর্তী গন্তব্য হয় হাসপাতাল না হয় স্থায়ী ঠিকানায়। তাই বাইক চালানোর সময় পুর্ন মনযোগ পথের দিকে থাকাটা জরুরী।
৮। আমরা অনেক দেখতে পায় কিছু উঠতি বয়সী তরুন বাইকার বাইকি নিয়ে অনেক ধরনের কারসাজী করে থাকে তার মধ্যে অন্যতম হলো দ্রুত গতি উঠিয়ে সামনে চাকা শুন্যে উঠিয়ে দেওয়া আবার ব্রেক ধরে কখনও পেছনের চাকা। এই বিষয়টা অনেকের কাছে আকর্ষনীয় হলেও এটা বাইকার এবং পথচারী সবার কাছে বিপদজনক। এইসব ব্যাপারে সকল শ্রেনী পেশার ব্যক্তিদের সতর্ক থাকা উচিত।
৯। চলতি পথে কোন যানবাহনের খুব কাছাকাছি অবস্থান করবেন না। আপনি আপনার মোটরসাইকেল প্রয়োজনমত নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন এমন দুরুত্ব বজায় রেখে চলবেন কারন আপনার সামনের বাহন যদি হুট করে ব্রেক করে দেয় আর আপনি যদি তার খুব কাছাকাছি অবস্থান করেন তবে আপনি তাৎক্ষনিক ব্রেক করার সুযোগ নাও পেতে পারেন। এটা আপনার এবং আপনার বাইকের সিরিয়াস রকম ক্ষতির কারন হতে পারে।
উপরে উল্লেখ করা প্রতিটা পয়েন্টই নিরাপদ বাইক রাইডের জন্য খুব গুরুত্বপুর্ন। তাই বাইকার হিসেবে আমরা সবাই ই চেষ্টা করবো এই বিষয়গুলা খেয়াল রেখে বাইক চালানোর
হ্যাপি বাইকিং