মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তন
মোটরসাইকেল ক্রয়-বিক্রয় দিনে দিনে ক্রমশ বেড়েই চলেছে। যে কোন প্রকার যানবাহনের ক্ষেত্রে বৈধ মালিকানা থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময়ে আমরা অনেকের নিকট থেকে তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল কিনছি কিন্তু আমরা বারংবার ভুলে যাচ্ছি মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়টা। নিজের নামে নিজের মোটরসাইকেল থাকা বিষয়টা আজকাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ আমাদের মোটরসাইকেলটি দিয়ে যদি কোন অবৈধ কাজ করা হয় সেক্ষেত্রে মালিক ও বিক্রেতা দুজনকেই আইনের মুখোমুখি সম্মুখীন হতে হবে। অন্যদিকে মোটরসাইকেল চুরি বা খোয়া গেলে মালিকানা পরিবর্তনের কাগজ না থাকলে আপনার মোটরসাইকেলটি হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী। তাই মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়টি মোটরসাইকেল ক্রয়-বিক্রয় এর ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।(বি আর টি এ) এর নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী মালিকানা পরিবর্তন এর ক্ষেত্রে তেমন কোন বেগ পেতে হয়না। আসুন জেনে নেই কিভাবে মোটরসাইকেলের মালিকানা পরিবর্তন করা যায়ঃ
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও বিষয়বস্তু
১। (টি ও) ফরম।
২। (টি টি ও) ফরম।
৩। ব্যাংক জমাদানের রশিদ (৩৬৬৫ টাকা)
৪। মালিকের নির্দিষ্ট স্বাক্ষর ও নমুনা স্বাক্ষর ফরম সাথে ৩ কপি ষ্ট্যাম্প সাইজের ছবি।
৫। ব্লু বুকের ওরিজিনাল কপি ।
৬। ক্রেতার জাতীয় পরিচয় পত্র এর ফটোকপি।
৭। বিক্রেতার জাতীয় পরিচয় পত্র এর ফটোকপি।
৮। সবশেষে, ৩০০ টাকার একটি ষ্ট্যাম্পে ক্রেতা ও বিক্রেতার হলফ নামা এবং চুক্তিনামা এবং ক্রেতা বিক্রেতার ছবি উল্লেখ থাকতে হবে।
মোটরসাইকেল কিংবা অন্য যে কোন যানবাহনের মালিকানা পরিবর্তন এর দুটি প্রক্রিয়া।এই দুটি প্রক্রিয়াতে মালিক ও ক্রেতাকে অব্যশই উপস্থিত থাকতে হবে। পরিবর্তন প্রক্রিয়া শুরু করার পূর্বে ক্রেতা ও বিক্রেতা কে কিছু করনীয় সম্পন্ন করতে হয়।
ক্রেতার করণীয়
প্রথমে ক্রেতাকে (টি ও) ফরম ও (টি টি ও) ফরমে স্বাক্ষর দিতে হবে। তারপর ত্রেতাকে ব্যাংক জমাদানের মূল রসিদ দাখিল করতে হবে। ক্রেতাকে অবশ্যই তার (টি আই এন)সার্টিফিকেট, জাতীয় পরিচয় পত্র ফটোকপি, বর্তমান ঠিকানা সহ বাসার বিদ্যুৎ বিল/ টেলিফোন বিলের ফটোকপি সত্যায়িত করে দাখিল করতে হবে। ক্রেতাকে আরও কিছু কাগজ পত্র যেমন, ওরিজিনাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (ব্লু বুক), ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস সার্টিফিকেট, রোড পারমিট এর সত্যায়িত ফটোকপি প্রদান করতে হবে। নির্ধারিত নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা দাখিল করতে হবে। তবে ক্রেতা যদি কোন প্রতিষ্ঠান হয় সেক্ষেত্রে হলফনামার পরিবর্তে অফিসিয়াল পেপার প্যাডে চিঠি প্রদান করতে হবে। ক্রেতাকে ইংরেজি বড় হাতের অক্ষর ও ৩ কপি ষ্ট্যাম্প সাইজের কালারিং ছবি দিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে।(বি আর টি এ) কর্তৃক পরিদর্শন ফরম কোন অভিযোগ ছাড়া ক্রেতার নিকট থাকতে হবে। বিক্রেতার স্বাক্ষর ভুল হওয়ার ক্ষেত্রে তাকে সরেজমিনে (বি আর টি এ) এর অফিসে হাজির হতে হবে। মালিকানা পরিবর্তন এর ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত করণীয় গুলো ক্রেতাকে (বি আর টি এ) অফিস থেকে সম্পন্ন করতে হবে।
বিক্রেতার করণীয়
রাজস্ব ষ্ট্যাম্প ও স্বাক্ষীর স্বাক্ষর সহ বিক্রেতাকে (টি টি ও) ফরমে ও বিক্রয় রশিদে স্বাক্ষর প্রদান করতে হবে। অতঃপর সরকার নির্ধারিত নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা দাখিল করতে হবে। বিক্রেতা যদি কোম্পানি হয় সেক্ষেত্রে কোম্পনির লেটার হেড প্যাডে ইন্টিমেশন, বোর্ড রেজুলেশন ও অথোরাইজেশন প্রদান করতে হবে।যদি মোটরসাইকেল টি কোন কোম্পানি বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠান এর দায়বদ্ধ থাকে সেক্ষেত্রে দায়বদ্ধ প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধ সংক্রান্ত ছাড়পত্র, লোন এডজাস্টমেন্ট স্টেটমেন্ট, ব্যাংক কর্তৃক সহকারী পরিচালক(ইঞ্জিঃ) (বি আর টি এ) বরাবর সরকার নির্ধারিত নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা প্রদান। সবশেষে ক্রেতাকে স্বশরীরে সেখানে হাজির হতে যবে যাতে করে বিক্রেতা তার স্বাক্ষর গড়মিল করতে না পারে এবং অব্যশই তাকে তার জাতীয় পরিচয় পত্র এর সত্যায়িত ফটোকপি সঙ্গে নিয়ে আনতে হবে।
উপরিউক্ত কাজ গুলো সম্পন্ন করা হয়ে গেলে ( বি আর টি এ) কতৃপক্ষ একটি ইস্যু দিন ধার্য করবে এবং তারা মালিককে মোবাইল এস এম এস এর মাধ্যমে জানিয়ে দিবে। তাই মোবাইল নাম্বার এন্ট্রি করার কথা ভুলা যাবে না।