মোটরসাইকেল রাইডে পকেট টুকিটাকি
মোটরসাইকেলে টুলবক্স নামে একটি জায়গা থাকে যেখানে প্লাগ খোলার যন্ত্র, স্ক্রু ড্রাইভার, প্লায়্যার্স ইত্যাদি থাকে, যাদের সাহায্য বাইকের ছোটাখাটো সমস্যা সমাধানে কাজে লাগানো যায়। এসব টুলকিট এর পাশাপাশি আরো কিছু ক্ষুদ্র জিনিস আপনার সাথে বিশেষ করে আপনার জ্যাকেটের বা প্যান্টের পকেটেই নিয়ে নিতে পারেন যেগুলো সাথে রাখতে সমস্যা নেই কিন্তু বিপদের মুহুর্তে বড় ভূমিকা রাখে। টুলবক্সে রাখা টুলস গুলো প্রতিদিন ব্যবহার হয় না কিন্তু বিপদের মুহুর্তে যেনো কাজে লাগে সেজন্য সব সময়েই বাইকের সাথে রাখা হয় তেমনি আপনার পকেটেও কিছু টুকিটাকি ছোটোখাটো দরকারি জিনিস বহন করা উচিত যা প্রয়োজনের মুহুর্তে ব্যবহার করতে পারেন।
বাইকের অতিরিক্ত চাবি
প্রতিটি বাইকেরই একাধিক চাবি থাকে। আমরা সাধারনতই একটি চাবি বাসাতে ফেলে রাখি। কিন্তু সেই মুহুর্তের কথা ভাবুন, দূরে কোথাও গিয়ে কোন কারনে বাইকের চাবি হারিয়ে ফেললেন, তখন কি হবে? বাসা থেকে চাবি নিয়ে বাইক চালুর সুযোগ পাচ্ছেন না। এমন অবস্থায় যেনো না পড়তে হয় সেজন্য বাইকের অতিরিক্ত একটি চাবি সব সময় পকেটে রাখা উচিত। সেই পকেটেই রাখুন যেখানে থেকে পড়ে যাওয়া বা হারানোর কোন সুযোগ নেই। যেমন জ্যাকেটের চেইনযুক্ত পকেটে, বা প্যান্টের এমন পকেটে যেখানে থেকে পড়ে যাবে না, হারিয়ে যাবে না। এই জিনিসটি আপনার প্রতিদিন কাজে লাগবে না, কিন্তু যেদিন লাগবে সেদিনের কথা কোনদিন ভূলতে পারবেন না।
চাকায় হাওয়া মাপার যন্ত্র (Air-pressure gauge)
ভয় পাবেন না, মেকানিকদের সেই বড় বড় যন্ত্র পকেটে নিয়ে ঘুরতে বলিনি। এটি সাইজে একটি কলমের সমান আর যেগুলো ডিজিটাল সেগুলোও অনায়াসে হাতের মুঠোতে রাখা যায় বা তার থেকেও ছোট। যাইহোক ছোট এই যন্ত্রটি আচমকা কাজে যেমন লাগে তেমনি কাছে থাকলে নিয়মিতই কাজে লাগবে চাকার হাওয়ার প্রেসার মাপার জন্য। নিয়মিত চাকার হাওয়ার প্রেসার মাপা ভালো অভ্যাস। প্রতিদিন নয়, কিন্তু নিয়মিত। রাস্তায় চাকার হাওয়া কম মনে হলে বা পাংকচার হয়েছে কিনা বুঝতে সাহায্য করবে।
মাল্টিটুলস
আরেকটি সকল কাজের কাজী। তাই বলে স্টাইল করে পকেটে সুইচ আর্মি নাইফ রাখবেন না, ততো কাজে দিবে না। বরং সেই মাল্টি টুলস ব্যবহার করুন যার টুলসগুলো আপনার বাইকের কিছু স্ক্র খোলা/লাগানোর জন্য ব্যবহার করা যায়, নাট টাইটে কাজে লাগে। মাথায় রাখতে হবে এটি আপনার মোটরসাইকেলের টুলবক্সের বিকল্প নয়, বরং তার সাহায্যকারী হিসেবে কাজ করবে।
মিনি টর্চ( Flashlight )
রাতের আধারে আচমকা ইলেকট্রিক সার্কিটে সমস্যা হলো, বাইকের চাকা পাংকচার হলো, চাকা থেকে পেরেক বের করতে হবে এরকম সমস্যায় অতিরিক্ত আলোর প্রয়োজন পড়ে। বাজারে হরেক কিসিমের মিনি পকেট লাইট পাওয়া যায়। কেউ কলম এবং টর্চ, কেউ কলমের মতো দেখতে আবার কেউ ক্রেডিট কার্ডের সাইজে এবং অনায়াসেই মানিব্যাগে রাখা যায়। যেটিই নেন, সাথে থাকলে বিপদের মুহূর্তে বড় ধরনের সাহায্যেই লাগবে।
ফেসিয়্যাল টিস্যু
আপনার বান্ধবী বা মহিলাসহযাত্রীর কথা ভেবে এটি নিতে বলছি না। দু-চার পিস ফেসিয়াল টিস্যু বা চাই্লে বাজারে মিনিপ্যাক ফেসিয়াল টিস্যু সাথে রাখতে পারেন মুলত হেলমেটের ভাইজর মোছার জন্য। দূরের রাস্তায় চলতে বা কখনও পড়ে গিয়ে ভাইসরে ময়লা লেগে যাওয়া স্বাভাবিক ঘটনা। হাত দিয়ে বা বাইক মোছা কাপড় দিয়ে মুছলে ভাইসরে দাগ পড়ে যাবার সম্ভবনা অনেক। তাই সাথে ২/৩পিস ফেসিয়াল টিস্যু রাখতে পারেন।
এলকোহল প্যাড এবং ব্যান্ড-এইড
এলকোহল প্যাড হলো এক থেকে দুই ইঞ্চি সাইজের ছোট ছোট নরমপ্যাড যেখানে এলকোহলজাতীয় জীবানুনাশক মেশানো থাকে। মুলত দুর্ঘটনায় ছোটোখাটো কাটাছেড়াতে খুবই কার্যকর। চাইলে মানিব্যাগেই ২/৪টা রাখতে পারেন, সমস্যা হবে না। সাথে ব্যান্ড-এইড রাখলে আরো ভালো।
শেষ কথা
বিপদ বলে কয়ে আসে না। এই কারনেই বিপদের প্রস্ততি রাখতে হয় বিপদের মাত্রা কমানোর জন্য। যে জিনিসগুলোর কথা বলা হলো আপাত দৃষ্টিতে তেমন কাজের মনে না হলেও বিপদের মুহুর্তে এই ছোট জিনিসগুলোই আপনার অনেক বড় কাজে দিবে। তাই এই ধরনের জিনিস বাইক রাইডের সময় সাথে রাখার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। অন্তত যারা দূরে বা রাতে রাইড করেন তাদেরতো অবশ্যই।