Yamaha Banner
Search

মোটরসাইকেল সেফটি গিয়ারস

2016-11-25

মোটরসাইকেল সেফটি গিয়ারস


Motorcycle-Riding-Safety-Gears

চারচাকায় শরীর বহন করে, দুই চাকা বহন করে হৃদয়। মোটরসাইকেল নিয়ে এভাবেই ভাবের বহি:প্রকাশ করা হয়। তারুন্যের বাহন হিসেবে মোটরসাইকেল অতুলণীয়। গতির উন্মাদনার সংগে অবাধ স্বাধিনতার সংমিশ্রন হলো মোটরসাইকেল। সমস্যা একটাই, নিরাপত্তা। এমনিতেই বাংলাদেশের আবহাওয়া বৈচিত্রময়। শীত, গ্রীস্ম বর্ষা রয়েছেই। সাথে বিভিন্ন দুর্ঘটনাজনিত সমস্যাতো আছেই। এছাড়া বর্তমানে অনেকেই দূর-দূরান্তে বাইক নিয়ে চলে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের নতুন নতুন মনরোম জায়গা উন্মোচন করছেন এইসব ভ্রমন পিয়াসু রা। অনেকেই স্টান্টসহ বাইক নিয়ে বিভিন্ন খেলাধূলা করে থাকেন। সবার জন্যই প্রয়োজন পড়ে শারিরীক নিরাপত্তার। একটা সময় বাইকাররা হেলমেটই পরতে চাইতেন না। সময় বদলেছে। সবাই সচেতন হচ্ছেন। বাইকররা এখন শুধু হেলমেটই নয় শরীরের নিরাপত্তার জন্য অন্যান্য সেফটি গিয়ারসও ব্যবহার করে থাকেন। আজ আমরা সেইসব সেফটি গিয়ারসের সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেবো। প্রয়োজন অনুসারে আপনিও এগুলোর মধ্যে থেকে ব্যবহার করতে পারেন নিজের নিরাপত্তার জন্যই।


motorcycle-riding-safety-gears-helmets
হেলমেট (Helmets): আদি ও অপরিহার্য্য নিরাপত্তা রক্ষা কবজ। বাইকের মাথায় রাজার মুকুটের মতো শোভা পায় এই জিনিস। একজন বাইকার অন্য যেকোনো সেফটি গিয়ারসের কথা না ভাবলেও হেলমেটের কথা ভোলা সম্ভব নয়। বাইকের ইনজিন চালুর পূর্বে মাথায় হেলমেট পরা উচিত। যেকোন দুর্ঘটনায় সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস। কাজের ধরনভেদে বিভিন্ন ধরনের হেলমেট হয় যেমন হাফ-হেলমেট, ফুল-ফেস হেলমেট, ওপেনফেইস হেলমেট ইত্যাদি।

হেলমেট নিয়ে বিস্তারিত


motorcycle-riding-safety-gears-goggles
চোখ সুরক্ষায় (Eyewear): মানব দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ন অংশ। আর তাই তার নিরাপত্তার বিষয়টিও অবহেলার নয়। চোখের সুরক্ষায় ভালো হেলমেট হয়তো যথেষ্ট কিন্ত কিছু হেলমেটে সামনে ভাইসর(Visor) থাকে না সেগুলোতে গগলস ব্যবহার করতে হয়। আবার গ্রীস্মপ্রধান দেশে রোদের তীব্ররশ্মি থেকে বাচতে সানগ্লাস ব্যবহার করা হয়। গগলস মুলত চশমারই রুপান্তরিত রূপ যেখানে মাথার পেছন দিয়ে ফিতে বা রাবার ব্যান্ড দিয়ে আটকানো থাকে এবং চোখের অংশকে বাতাস বা ধুলোকনা থেকে রক্ষা করতে পুরোটা ঢেকে দেয়া থাকে।


motorcycle-riding-safety-gears-jackets-vests
জ্যাকেট ও ভেস্ট: শরীরের উর্ধাংশ সুরক্ষায় বিভিন্ন ধরনের জ্যাকেট ব্যবহার করা হয়। কেউ শীত থেকে রক্ষা করে, কেউ গরম থেকে। কোনটি চামড়ার তৈরী আবার কেউ কৃত্রিম সুতার। যে যেভাবেই তৈরী হোক, সবার উদ্দেশ্য একটাই- রাইডারের সুরক্ষা। আর ভেস্ট হলো হাতবিহীন পাতলা জ্যাকেট বা জামা। যেটি সাধারনত অন্য পোশাকের উপরে পরা হয়। কখনও বাতাস থেকে বাচার জন্য, কখনও ঠান্ডা থেকে বাচার জন্য ব্যবহার করা হয়। অনেক ভেস্ট উজ্বল রংএর হয়ে থাকে অন্য রাইডারের চোখে দৃশ্যমান থাকার জন্য।



motorcycle-riding-safety-gears-gloves
হাতমোজা(Gloves): মানুষ অভ্যস বশতই যে কোনো বিপদ হাত দিয়ে ঠেকানোর চেষ্টা করে আর তাই হাতের সুরক্ষার প্রয়োজন হয় অনেক বেশি। বাইকারদের জন্য বিভিন্ন কাজের উপযোগী ভিন্ন ভিন্ন গ্লাভস রয়েছে। গ্লাভসগুলোর হাতের তালুর অংশে পাতলা থাকে এবং হ্যান্ডেলবার ধরার জন্য ভালো গ্রিপিং এর ব্যবস্থা থাকতে পারে। হাতের বাইরের দিকে উচু প্যাড এর মাধ্যমে আংগুল বা অন্যান্য অংশগুলোকে সুরক্ষা দেয়া হয়ে থাকে। গ্লাভসগুলোতে নরম ফোম বা প্যাডের পাশাপাশি কাপড়, চামড়া রাবার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।



motorcycle-riding-safety-gears-pants
প্যান্ট (Pants): কোমর থেকে নিম্নাংশ সুরক্ষার জন্য প্যান্ট ব্যবহার করা হয়। শীতের হাত থেকে রক্ষা পেতে গরম প্যান্ট রযেছে। এছাড়াও পড়ে গিয়ে ঘষা খাওয়া বা অন্যান্য ছোটখাটো দুর্ঘটনা থেকে রক্সা পেতে বিশেষধরনের প্যান্ট ব্যবহৃত হয়।



motorcycle-riding-safety-gears-boots
জুতা (Footwear): প্রথমতই নিরাপত্তার জন্য জুতা পরতে হয়। এছাড়াও রেসিং এর জন্য বা স্টান্ট এর জন্য ভিন্ন ধরনের বুট/জুতা পাওয়া যায়। রাইডারের পা এর সুরক্ষায় এগুলো অবশ্যই ব্যবহার করা উচিত। জুতো গুলো কখনও চামড়া, কখনও রাবার বা নরম ফোম, কাপড় ইত্যাদি দিয়ে তৈরী হয়ে থাকে।


motorcycle-riding-safety-gears-rainwear
বৃষ্টির সুরক্ষা (Rainwear): বাংলাদেশে বছরে অন্তত ২মাস বৃষ্টির প্রকোপ থাকে। এছাড়াও অন্যান্য সময়ে এমনকি শীতের সময়েও কখনও কখনও বৃষ্টির দেখা মেলে। তাই প্রতিটি রাইডারের উচিত ভালো মানের রেইনকোট ব্যবহার করা। রেইনকোটগুলো টুপিযুক্ত পা থেকে মাথা পর্যন্ত বৃস্টি থেকে সুরক্ষা দিয়ে থাকে। এছাড়াও বৃস্টির জন্য আলাদা জুতো এবং গ্লাভস ব্যবহার হয়ে থাকে।


motorcycle-riding-safety-gears-coldwear
ঠান্ডার সুরক্ষা (Coldwear): বাংলাদেশে শীতের তীব্রতা না থাকলেও শীতকালে বৃষ্টি বা বাতাসের কারনে অনেক বেশি শীত কখনও কখনও অনুভুত হয়ে থাকে। ঠান্ডা থেকে বাচার জন্য ফোমযুক্ত গরম জ্যাকেট, বা চামড়ার জ্যাকেট, হাতমোজা এবং জুতা ব্যবহার হয়ে থাকে। শীত বা বাতাস থেকে বাচার জন্য বিভিন্ন ধরনের headwear পাওয়া যায় যেমন নেক টিউব, মাস্ক ইত্যাদি। এমনকি নাকে যেনো ঠান্ডা না লাগে সেজন্য ব্যবহৃত হয় Breath Box.


motorcycle-riding-safety-gears-protective
সুরক্ষা গিয়ারস (Protective Gear): উপরের আলোচ্য গিয়ারগুলো সাধারন ব্যবহারের জন্যই মুলত ব্যবহার করা হয়। এখন আমরা পরিচিত হবো কিছু দুর্ঘটনায় সুরক্ষা দিতে পারে এমন কিছু গিয়ারস এর সাথে। সুরক্ষা গিয়ারস হিসেবে পরিচিত হলো Chest Armor, Back Protectors, Elbow Armor, Shoulder Armor, Knee Armor, Hip Armor, Reflective Vests ইত্যাদি। এছাড়াও Tops এবং Bottoms হিসেবে আরো কিছু ছোটবড় গিয়ারস রয়েছে। এই ধরনের গিয়ারগুলো মুলত বাইকারের দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষার জন্যই ব্যবহৃত হয়। মজবুত সুতায় বোনা কাপড়, মজবুত রাবার কখনও ধাতব পাত ইত্যাদি ব্যবহৃত হয় এইসব গিয়ারস এ। কেউ বুক কেউ পিঠ কেউ কনুই আবার কেউ হাটুকে আঘাত থেকে রক্ষা করে।যারা লং টুর এ যান বা স্টান্ট করে থাকেন তারা এইসব গিয়ারস ব্যবহার করতে পারেন।


motorcycle-riding-safety-gears-racesuits
রেইস এর পোশাক (Racesuits): নাম দেখেই বুঝতে পারছেন কাদের জন্য এই জিনিস। যদিও আমাদের দেশে রেইস ট্র্যাকে রেইসের ব্যবস্থা নেই কিন্তু হতে কতক্ষন? যারা রেইস পছন্দ করেন তারা নিরাপত্তার জন্য এই স্যুট ব্যবহার করতে পারেন। এই ধরনের স্যুট ফ্লেক্সিবল, আরামদায়ক কিন্তু অবশ্যই সুরক্ষাদায়কও। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চামড়া দিয়ে প্রস্তুত এই স্যুটে শরীরের অন্যান্য অংশ সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরন থাকে।

আলোচনায় চেষ্টা করেছি মোটরসাইকেল রাইডারের নিরাপত্তার জন্য ব্যবহৃত কিছু গিয়ারস এর সাথে পরিচিত করিয়ে দেবার। আশা করি গিয়ারসগুলো নিয়ে আগামিতে আরো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার চেস্টা করবো ইনশাআল্লাহ। সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন।

Motorcycle-Riding-Safety-Gears
Rate This Tips

Is this tips helpful?

Rate count: 25
Ratings:
Rate 1
Rate 2
Rate 3
Rate 4
Rate 5

Bike Tips

বন্যা পরিস্থিতিতে বাইকের যত্ন নেয়ার কিছু টিপস
2024-08-27

বর্তমানে দেশে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, এবং দেশের বেশ কিছু অঞ্চল ডুবে গিয়েছে, পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক এলাকায় মানুষের বাড়িঘর থেকে সবকিছুই ডুবে গেছে, এই পরিস্থিতে আপনার বাইকের যত্ন নেয়া খুবই কষ্টসাধ্য একটি বিষয়, তবুও আমাদের পক্ষে সম্ভব হলে চেষ্টা করতে হবে বাইকের যথাসম্ভব যত্ন ...

Bangla English
মোটরসাইকেল দীর্ঘদিন ব্যবহার না করলে কি কি সমস্যা হতে পারে
2024-07-28

মোটরসাইকেল দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিস হয়ে থাকলেও বিভিন্ন কারনে অনেক সময় মোটরসাইকেল দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হয় না, যেমনটা আমরা লকডাউন এর সময়ে দেখেছি, এবং খুব সম্প্রতি দেশের যেই অবস্থায় তাতে অনেকেই বাইক বের করতে পারছে না। একটি বাইক অনেকদিন ব্যবহার না করলে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। আজকে আমরা আলোচনা কর...

Bangla English
রাতের বেলা কেনো বাইক নিয়ে ট্যুর দেয়া উচিত না
2024-07-25

বাইকপ্রেমি বাইকারস যারা ট্যুর দিতে পছন্দ করে থাকেন, তারা অনেকেই রাতের বেলায় বাইক রাইড করে ট্যুর দিয়ে থাকেন, তবে হাইওয়েতে বেশিরভাগ রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো নেই, এছারা ও বিভিন্ন কারণে অনেকেই রাতে ট্যুর দিয়ে থাকেন, তবে বাংলাদেশের রাস্তা এবং সার্বিক সবকিছু বিবেচনা করে রাতে ট্যুর দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু বাধা বিপত...

Bangla English
কিভাবে বাইকের অপ্রয়োজনীয় সাউন্ড কমাবেন
2024-07-15

স্বাভাবিক ভাবে একটি বাইক চলন্ত অবস্থায় তার ইঞ্জিনের সাউন্ড বাইকের সাইলেন্সর দিয়ে বের হয়, এবং সাইলেন্সর দিয়ে বাইকের সাউন্ড কমানো হয়ে থাকে এবং সাউন্ড শুনতে ভালো লাগে, তবে বাইকের অন্যান্য যন্ত্রাংশ দিয়েও বিভিন্ন সাউন্ড আসতে পারে, ঠিক মতো পরিচর্যা না করার ফলে বাইকের বিভিন্ন অংশ থেকে এমন সাউন্ড হয়ে থাকে, ...

Bangla English
ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনের সময় অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করবেন কি না
2024-07-14

একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর আমাদের বাইকের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতে হয়, আমরা নিকটস্থ সার্ভিস সেন্টার বা মেকানিকের কাছে গিয়ে থাকলে তারা ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করে দিয়ে থাকে, তবে অনেক ব্র্যান্ডের সার্ভিস সেন্টারে গেলে তারা ইঞ্জিন অয়েলের সাথে অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়ে থাকে, এতে করে আমাদের খরচ ...

Bangla English
Filter

Filter