Yamaha Banner
Search

বাইকারদের জন্য রাজশাহীর দর্শনীও স্থান সূমহ

2020-12-05

বাইকারদের জন্য রাজশাহীর দর্শনীও স্থান সূমহ


1607146234_raj rhumb.jpg
গ্রিন সিটি, সিল্ক সিটি, এডুকেশন সিটি হিসেবে পরিচিত এই নগরী অবস্থিত বাংলাদেশের উওর-পশ্চিম অঞ্চলে। আমের জন্য বিখ্যাত এই নগরীর রয়েছে অনেক প্রাচীন ইতিহাস। রাজশাহী বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও ঐত্যিহবাহী মহানগরী এবং উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় শহর। অনেক ভ্রমন পিপাসু রয়েছেন যারা রাজশাহীতে এসে রাজশাহীর দর্শনীয় স্থানগুলো উপভোগ করতে চান সেসব ভ্রমন পিপাসুদের জন্য রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান।বিশেষ করে বাইকাররা যারা আসেন তারা রাজশাহীকে খুব বেশি পছন্দ করেন কারণ এই শহরের নির্মল বাতাস, পরিবেশ, জনসংখ্যা সব কিছু নিয়ন্ত্রিত এবং বসবাসের জন্য উপযুক্ত । অন্যদিকে আধুনিক রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট , ফ্লাইওভার ত্থাকার কারণে রাজশাহীর যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত । বাইক নিয়েই যে কোন স্থানে সময়ের মধ্যে পৌঁছানো যায় বলে এখানে বাইকারদের বেশ আনাগোনা। তো চলুন এক নজরে দেখে নিই বাইকারদের জন্য এই রাজশাহীতে কী কী দর্শনীয় স্থান রয়েছে।

 পুঠিয়া শিব মন্দির
 হাওয়াখানা
 পুঠিয়া রাজবাড়ী
 বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
 শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা
 পদ্মার পাড়
 শাহ মখদুম রূপোশ মাজার
 রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
 বাঘা মসজিদ
 শহীদ জিয়া শিশু পার্ক
 বিল কুমারী ও নাইস গার্ডেন

1607146380_Tour-puthia.jpg
পুঠিয়া শিব মন্দির, হাওয়াখানা ও পুঠিয়া রাজবাড়ী

রাজশাহী শহর থেকে ৩০ কিমি দূরে অবস্থিত পুঠিয়া রাজবাড়ী , পুঠিয়া শিব মন্দির ও হাওয়াখানা একটি দর্শনীয় ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে পরিচিত। ১৮৯৫ সালে মহারানী হেমন্তকুমারী দেবী আকর্ষনীয় ইন্দো ইউরোপীয় স্থাপত্যরীতিতে আয়তাকার দ্বিতল বর্তমান রাজবাড়ীটি নির্মাণ করেন। ভবনের সম্মুখ ভাগের স্তম্ভ, অলংকরন, কাঠের কাজ, কক্ষের দেয়ালে ও দরজার উপর ফুল ও লতাপাতার চিত্রকর্ম চমৎকার নির্মাণ শৈলীর পরিচয় বহন করে। রাজবাড়ীর ছাদ সমতল, ছাদে লোহার বীম, কাঠের বর্গা এবং টালি ব্যবহৃত হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য রাজবাড়ির চারপাশে পরিখা খনন করা হয়েছিল।এই স্থানকে ঘিরে রয়েছে অনেক অজানা রহস্য। বাইকারদের কাছে এই স্থানটি অনেক পরিচিত এবং জনপ্রিয়। এমন অনেক বাইকার আছেন যারা রাজশাহী বেড়াতে এসেছেন কিন্তু পুঠিয়া রাজবাড়ী দেখেনি এরকম ভ্রমণকারীদের সংখ্যা অতি নগণ্য। রাজশাহী শহর থেকে বাইকে চেপে আপনি খুব সহজেই পুঠিয়া যেতে পারবেন। এজন্য আপনাকে অবলম্বন করতে হবে রাজশাহী – নাটোর হাইওয়ে। রাজশাহী শহর থেকে আপনি ভদ্রা, তালাইমারি মোড় হয়ে যেতে পারেন অথবা সাহেব বাজার থেকে তালাইমারী যাওয়ার রাস্তা ধরে আপনি যেতে পারেন ।

তালাইমারি মোড় পার হবার পর প্রথমেই দেখতে পারবেন রাজশাহী প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এবং তারপর দেখতে পারবেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। সেই রাস্তা ধরে সামনে যেতে যেতে ৩০ কিমি পথের পর পুঠিয়া বাজার। পুঠিয়া বাজার শুরু হওয়ার সময় হাতের ডান দিক দিয়ে পুঠিয়া রাজবাড়ী যাওয়ার রাস্তা। মনে রাখবেন রাজশাহী থেকে নাটোর যাবার সময় পুঠিয়া বাজারের শুরুতে হাতের ডান দিকের রাস্তা এবং নাটোর থেকে রাজশাহী আসার সময় হাতে বাম দিকে রাস্তা । এই রাস্তা সংলগ্ন একটি মসজিদ আছে এই মসজিদের পাশ্ব দিয়ে রাস্তাটাই মুলত পুঠিয়া রাজবাড়ী যাওয়ার রাস্তা। এই রাস্তা ধরে ১ কিমি গেলেই শুরুতেই আপনাদের চোখে পড়বে পুঠিয়া শিবমন্দির যেটাকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিব মন্দির বলা হয়ে থাকে তার একটু সামনে গেলেই দেখতে পারবেন বৃহৎ আকার একটি বাসা যার নাম পুঠিয়া রাজবাড়ী । পুঠিয়া রাজবাড়ীর সামনে রয়েছে বিশাল মাঠ এবং এই মাঠে বসে রতের মেলা ।পুঠিয়া-রাজশাহী মহাসড়কের তারাপুর বাজার থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দক্ষিণে এবং পুঠিয়া বাজার থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে একটি পুকুরের মধ্যবর্তী স্থানে হাওয়াখানা অবস্থিত। দ্বিতল এ ইমারতের নীচতলার আর্চযুক্ত। এ ইমারতের দক্ষিণ পাশে দোতালায় উঠার জন্য সিড়ি আছে। পুঠিয়া রাজবাড়ীর সদস্যরা রাজবাড়ী থেকে রথ বা হাতীযোগে, পুকুরে নৌকায় চড়ে এসে অবকাশ যাপন এবং পুকুরের খোলা হাওয়া উপভোগ করতেন বলে জানা যায়।

1607146473_Tour-musume.jpg
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী মহানগরের কেন্দ্রস্থল হেতেম খাঁ-তে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। প্রত্নতত্ত্ব সংগ্রহের দিক থেকে এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সংগ্রহশালা। বরেন্দ্র জাদুঘর প্রতিষ্ঠায় নাটোরের দিঘাপাতিয়া রাজপরিবারের জমিদার শরৎ কুমার রায়, আইনজীবী অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় এবং রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল এর শিক্ষক রামপ্রসাদ চন্দ্রের উল্লেখযোগ্য আবদান রয়েছে। ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে তারা বাংলার ঐতিহ্য ও নিদর্শন সংগ্রহ ও সংরক্ষণের জন্য বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি গঠন করেন। ঐ বছরে তারা রাজশাহীর বিভিন্ন স্থানে অনুসন্ধান চালিয়ে ৩২টি দুষ্প্রাপ্য নিদর্শন সংগ্রহ করেন। এই নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ করার জন্য শরৎ কুমার রায়ের দান করা জমিতে জাদুঘরটির নিজস্ব ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। নির্মাণ শেষ হয় ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে। একই বছরের ১৩ নভেম্বর বাংলার তৎকালীন গভর্নর কারমাইকেল জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন।বাইকাররা রাজশাহী শহর যে এসে যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই জাদুঘর দেখিয়ে দিবে । এখানে যাওয়ার রাস্তা হল রাজশাহী কলেজ থেকে রাজশাহী কোর্টে যাওয়ার যে রাস্তা সেটা ধরে রাজশাহী কলেজ থেকে একটু সামনে যেতেই হাতের ডান পার্শ্বে চোখে পড়বে বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর ।

আরেকটি রাস্তা হল সিটি কলেজ এবং মেডিক্যাল কলেজের রাস্তা ধরে সিটি কলেজের একটু সামনে যেতেই একটা ৪ রাস্তার মোড় পড়বে। সেই মোড় থেকে হাতের বামে গেলেই বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর । বরেন্দ্র জাদুঘরের সংগ্রহ সংখ্যা ৯ হাজারেরও অধিক। এখানে হাজার বছর আগের সিন্ধু সভ্যতার নিদর্শন রয়েছে। মহেনজোদারো সভ্যতা থেকে সংগৃহীত প্রত্নতত্ত, পাথরের মূর্তি, খিষ্ট্রীয় একাদশ শতকে নির্মিত বুদ্ধ মূর্তি, ভৈরবের মাথা, গঙ্গা মূর্তি সহ অসংখ্য মূর্তি এই জাদুঘরের অমূল্য সংগ্রহের অন্তর্ভুত। মোঘল আমলের রৌপ্র মুদ্রা, গুপ্ত সম্রাট চন্দ্রগুপ্তের গোলাকার স্বর্ণমুদ্রা, সম্রাট শাহজাহানের গোলাকার রৌপ্য মুদ্রা বিশেষ ভাবে উল্যেখয়োগ্য। এখানে প্রায় ৫০০০ পুঁথি রয়েছে যার মধ্যে ৩৬৪৬টি সংস্কৃত আর বাকিগুলো বাংলায় রচিত। পাল যুগ থেকে মুসলিম যুগ পযর্ন্ত সময় পরিধিতে অঙ্কিত চিত্রকর্ম, নূরজাহানের পিতা ইমাদ উদ দৌলার অঙ্কিত চিত্র এখানে রয়েছে।

1607146663_Tour-zoo.jpg
শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা

ব্রিটিশ আমলে ইংরেজরা আমাদের দেশে ঘোড়দৌড় বা রেস খেলার প্রচলন করে। খেলা দেখা ও বাজি ধরায় প্রচন্ড উত্তেজানা সৃষ্টি হত। শহরাঞ্চলেই ঘোড়দৌড় মাঠ বা রেসকোর্স ছিল। রেসের নেশায় দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসতেন। অনেকে এ খেলায় সর্বস্বান্ত হয়েছে। কার্যত আয়োজকরাই লাভবান হয়েছে। রাজশাহী শহরের রেসকোর্স ছিল পদ্মার পাড়ে। এখন এই রেসকোর্স ময়দান রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা।রেস ও টমটম বন্ধ হওয়ার পর রাজশাহীর রেসকোর্স ময়দান দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত ছিল। শহরবাসীর বিনোদনের আদর্শ প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার জন্য তৎকালীন মন্ত্রী শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান ও জেলা প্রশাসক আব্দুর রউফ এখানে উদ্যান নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ১৯৭২ সালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। প্রায় ৩৩ একর ভূমিতে নির্মিত উদ্যানটিকে জেলা পরিষদের নিকট থেকে ১৯৯৬ সালের ২৬ নভেম্বর রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন গ্রহণ করে।

শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা যেতে আপনাকে যে পথ অবলম্বন করতে হবে সেটা হল রাজশাহী সাহেব বাজার জিরো পয়েন্ট থেকে পশ্চিম দিকে আনুমানিক ৩ কি.মি. দূরত্বে সিএন্ডবি মোড় , বাংলাদেশের ব্যাংক পার হয়ে রাজপাড়া এলাকায় পর্যটন মোটেলের পশ্চিমে এবং রাজশাহী বিভাগিয় কমিশনারের কার্যালয় ও রাজশাহী পুলিশ লাইন এর পূর্ব দিকে অবস্থিত। প্রধান রাস্তার উত্তর পার্শ্বের রাস্তা থেকে পার্কটি দেখা যায়। জিরো পয়েন্ট থেকে বাইক নিয়ে রাজশাহী কোর্ট যাবার প্রধান সড়ক ধরে ৩ কিমি গেলেই শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা। যেতে যেতে প্রথমেই চোখে পড়বে রাজশাহী কলেজ , ফায়ার সার্ভিস মোড়, নিঊ গভঃ ডিগ্রি কলেজ, সিএন্ডবি মোড়, বাংলাদেশ ব্যাংক, মিশন হাস্পাতাল এবং তারপরেই শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা। রাজশাহীর রেলগেট থেকেও এই স্থানে যেতে পারবেন রেলগেট লক্ষীপুর প্রধান সড়ক ধরে। লক্ষ্মীপুর মোড় পার হলেই সিএন্ডবি মোড় এবং সেখান থেকে হাতের ডান দিকের রাস্তা দিয়ে গেলেই একটু সামনে পাবেন শহীদ কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা।

1607147480_Tour-River.jpg
পদ্মার পাড়

নগরীর বুলনপুর থেকে বড়কুঠি ও পঞ্চবটি হয়ে সাতবাড়িয়া। দীর্ঘ প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে পদ্মার পাড় এখন রাজশাহী বাসীর জন্য বিনোদনের সেরা ঠিকানা।বুলনপুর থেকে শুরু করে পদ্মার কোল ঘেঁষে রয়েছে অনেক বিনোদোন স্পট । যার মধ্যে বুলনপুর আইবাধ, হাইটেক পার্ক, টি বাধ, সিমলা পার্ক, বিজিবি সীমান্তে নোঙ্গর, মুক্তমঞ্চ, পদ্মা গার্ডেন, এবং পঞ্চবটী মহাশশ্মান ও আইবাধ পদ্মার ধার ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে রাস্তার পথ। বর্তমানে এ সড়ক দিয়ে সহজেই বিনোদন পিপাসুরা হেঁটে পদ্মার অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে পারে। গ্রীষ্ম, শীত, বর্ষা কিংবা শরত, সব ঋতুতেই পদ্মা নদীকে ঘিরে মানুষের আনাগোনা। গ্রীষ্মে মরা পদ্মা আর বর্ষায় জলে ভরা পদ্মা সব সময় মানুষকে কাছে টানে। নিয়ে যায় এর নৈসর্গিকতায়। আর উৎসব হলে তো কথাই নেই। প্রতিটি উৎসবে বিনোদন পিয়াসীদের কাছে সেরা ঘোরাঘুরির স্পট হিসেবে প্রথম পছন্দ পদ্মা নদী।

এই পদ্মার পাড় নগরীর কোল ঘেঁষে অবস্থিত যার ফলে যেতে খুব বেশি বেগ পেতে হয় না। বাইক নিয়ে যে কোন রাস্তা দিয়ে বাজার থেকে দক্ষিন দিক দিয়ে পদ্মা নদী প্রবাহিত এবং যদি বুলনপুর থেকে দেখা শুরু করতে চান তাহলে আপনাকে যেতে হবে রাজশাহী-কোর্ট প্রধান সড়ক ধরে রাজশাহী কোর্ট পার হয়ে হাতের বাম পাশে দেখতে পাবেন হাইটেক পার্ক এবং এই হাইটেক পার্কে থেকে একটু সামনে গিয়ে হাতের বাম দিক দিয়ে হাইটেক পার্কের মধ্যে দিয়ে রাস্তা চলে গেছে বুলনপুর আইবাধের দিকে। এই বাধ ধরেই পূর্ব দিকে আসলে আপনি পদ্মার আপার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে সব কটি স্পট ঘুরে দেখতে পারবেন।

1607147906_Tour-mazar.jpg
শাহ মখদুম রূপোশ এর মাজার শরীফ

শাহ মখদুম রূপোশ বাংলার প্রথিতযশা সুফী সাধক এবং ধর্ম-প্রচারকদের মধ্যে অন্যতম। তার মাধ্যমেই বরেন্দ্র এবং গৌড় অঞ্চলে ইসলাম ধর্ম বিস্তার লাভ করে। তিনি ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষার্ধে এবং চতুর্দশ শতাব্দীর শুরুতে বাংলাদেশ তথা রাজশাহী অঞ্চলে ইসলামের সুমহান বানী প্রচার করেছিলেন। তার অনুপম ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়ে শত শত মানুষ ইসলাম ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করেন।বর্তমানে এসব অঞ্চল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল। শাহ মখদুমের প্রকৃত নাম আব্দুল কুদ্দুস। ধর্ম এবং জ্ঞান সাধনায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করার জন্য বিভিন্ন সময়ে তার নামের সাথে “শাহ”, “মখদুম”, “রূপোশ” ইত্যাদি উপাধি যুক্ত হয়। তিনি শাহ মখদুম রূপোশ নামেই সারা পৃথিবীতে বিখ্যাত। মৃত্যুর পড়ে তাকে তার বলে যাওয়া নির্ধারিত স্থানে দাফন করা হয় যেটা বর্তমানে রাজশাহী শহরের দরগাপাড়ায় অবস্থিত, যার দক্ষিণে প্রমত্তা পদ্মা নদী এবং পূর্বে রাজশাহী কলেজ অবস্থিত। প্রতি বছর হিজরী সনের রজব মাসের ২৭ তারিখ এখানে ওরস পালন করা হয়।কথিত আছে, শাহ মখদুম কুমিরের পিঠে চড়ে নদী পার হতেন।

বর্তমানে শাহ মখদুমের কবরের পাশে সেই কুমিরকে সমাহিত করা হয়। কুমিরটির কবর এখনো আছে।
এই মাজারে যেতে হলে আপনাকে অবলম্বন করতে হবে রাজশাহীর সাহেব বাজার থেকে মাস্টার পাড়া হয়ে নদীর ধার যাবার পথ। অন্যদিকে রাজশাহী কলেজের দক্ষিন দিকের শেষ প্রান্তে এসে কলেজ গেইট থেকে বের হয়ে হাতের ডান দিকে বা পশ্চিমে যাওয়ার পথ। আরেকভাবে যাওয়া যায় সেটা হল বরেন্দ্র জাদুঘরের মোড় থেকে দক্ষিন দিকে নদীর ধারে যাবার রাস্তা দিয়ে এসে একটা মোড় দেখতে পাবেন সেই মোড় থেকে পূর্ব দিকে বা হাতের বাম দিকে একটু সামনে গেলেই শাহ মখদুম রূপোশ এর মাজার শরীফ । প্রায় অনেক রাস্তা দিয়েই এই মাজার শরীফে আসা যায় বাইক নিয়ে পথ ভুল করলেও কোন সমস্যা নাই যে কাউকে জিজ্ঞেস করলে আপনাকে সেই মাজার যাবার পথ দেখিয়ে দিবে।

1607148303_Tour-ru.jpg
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে অবস্থিত প্রাচ্যের ক্যামব্রিজ খ্যাত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৫৩ সালের ৬ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কের পাশে রাজশাহী শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহার প্রাণের বিনিময়ে স্বাধিকার সংগ্রামের ইতিহাসে যুক্ত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর সামনে রয়েছে জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা এর সমাধি।প্রায় ৭৫৩ একর বা ৩০৪ হেক্টর এলাকাজুড়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস৷ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ৫টি উচ্চতর গবেষণা ইন্সটিটিউট, ৯টি অনুষদের অধীনে ৫৬টি বিভাগে বর্তমানে পরিচালিত হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। এই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে অনেক প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ ও ভাস্কর্য । রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেইট দিয়ে ঢুকলে প্রথমেই চোখে পড়বে সাবাস বাংলাদেশ ভাস্কর্য যেটা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মারক। তার একটু সামনে গেলেই প্রশাসনিক ভবন-১ এর সামনেই রয়েছে ড. মোহাম্মদ শামসুজ্জোহার সমাধি তার ঠিক ডান পাশে তাকালে দেখা যাবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুবর্ণ জয়ন্তির স্মারক সুবর্ণ জয়ন্তি টাওয়ার। এই সুবর্ণ জয়ন্তি টাওয়ার এর সামনে রয়েছে অত্যান্ত সুন্দর প্যারিস রোড যেটা বাংলাদেশের অন্যান্য সব সুন্দর রাস্তাগুলোর মধ্যে একটি। এই প্যারিস রোড সবচেয়ে সুন্দর লাগে বৃষ্টি শেষে পড়ন্ত বিকেলে। প্যারিস রোডে রয়েছে পুরোনো আমলের বড় বড় গাছপালা এই প্যারিস রোডে বাইক নিয়ে যাওয়ার অনুভূতি অন্যরকম। এছাড়াও রয়েছে শহীদ মিনার কমপ্লেক্স এটি প্রশাসনিক ভবন-২ এর সামনে বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে শহীদ মিনার অবস্থিত। যেখানে রয়েছে রাবি শহীদ মিনার, শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা দুটি মুরাল ও উন্মুক্ত মঞ্চ। উল্লেখ্য, এটি একটি ওয়াই ফাই জোন। শহীদ মিনারের সামনে রয়েছে সুন্দর বিশাল এলাকা জুড়ে মসজিদ । অন্যান্য সুন্দর মসজিদগুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদকে প্রথম সারিতে রাখা যাবে। এদিকে আরও রয়েছে বিদ্যার্ঘ যেটা মুক্তিযুদ্ধকালে শহীদ গণিত বিভাগের শিক্ষক হবিবুর রহমান স্মরনে "বিদ্যার্ঘ" স্মারকসৌধটি নির্মিত হয়। এটি শহীদ হবিবুর রহমান হল চত্বরে অবস্থিত|। স্ফুলিঙ্গ অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বপাশে শহীদ শামসুজ্জোহা হল প্রাঙ্গণে অবস্থিত। বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে একটু দূরে অবস্থিত। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা হলের প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ ।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় যেতে হলে আপনাকে অবলম্বন করতে হবে । জিরো পয়েন্ট- তালাইমারী প্রধান সড়ক কিংবা রেলগেট- তালাইমারী প্রধান সড়ক। তালাইমারী মোড়ের একটু সামনেই রয়েছে রাজশাহী প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) । এই রুয়েটের সামনে কাজলা মোড় থেকেই ক্যাম্পাস শুরু। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের জন্য রয়েছে কাজলা গেইট, প্রধান গেইট, বিনোদপুর গেইট ও চারুকলা গেইট। যে কোন একটি গেইট দিয়ে আপনি প্রবেশ করে ঘুরতে পারেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

1607148590_Tour-zia park.jpg
শহীদ জিয়া শিশু পার্ক

শহীদ জিয়া শিশু পার্কটি নির্মাণের জন্য ১৯৯৫ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। বিভিন্ন জটিলতার কারণে ঐ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে পার্কটি সর্ব সাধারনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে খুলে দেয়া হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী আব্দুল মান্নান ভূঁইয়া ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারির ২৫ তারিখে আনুষ্ঠানিকভাবে পার্কটি উদ্বোধন করেন।শহীদ জিয়া শিশু পার্কটি নির্মাণে ব্যয় করা হয় ১১ কোটি টাকারও বেশি। ১২.২১ একর জায়গা জুড়ে পার্কটিতে স্থাপন করা হয়েছে ১৯ টি আইটেমের ৭০ টি গেমস প্লে। আইটেমগুলো হচ্ছে মেরী গো রাউন্ড, মিনি রেলকার, মনোরেল স্কাই বাইক, ফ্লুম রাইডস, অক্টোপাস, সুপার সুইং, বাম্পার কার, বাম্পার বোট, কিডি রাইডস, ফিজিওলজিক্যাল গেমস, থ্রিডি মুভি থিয়েটার, পেডেল বোট, বাউন্সি ক্যাসেল, হর্স রাইড, ফ্রগ জাম্প, হানি সুইং, প্যারাট্রুপার, টি কাপ ও ব্যাটারী কার। ভিতরের আইটেমগুলো উপভোগ করার টিকিটের জন্য তিন দিকে তিনটি কাউন্টার আছে। হ্রদের মাঝখানে কৃত্রিম পাহাড় তৈরি করে পার্কটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাহাড়ের ভিতর দিয়ে মিনি রেলকার যাবার জন্য দুপাশে দুটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। বিচিত্র জন্তুর মুখ এবং বরফ ঘর সদৃশ বেশ সুন্দর প্রবেশ গেটের সঙ্গে আছে দোতলা ভবনের অফিস। এই ভবনের দোতলায় নামাজের ঘর আছে। বিভিন্ন জীবজন্তু ও কারুকার্য খচিত সীমানা প্রাচীর নজর কাড়ার পার্ক থেকে বেরুনোর গেটটি অক্টোপাস সদৃশ এবং ভেতরে প্রবেশের গেটটি বাঘের মুখ সদৃশ।

শহীদ জিয়া শিশু পার্কে যেতে হলে আপনাকে অবলম্বন করতে হবে রাজশাহী- নওগাঁ হাইওয়ে। রাজশাহীর প্রাণ কেন্দ্র রেলগেট থেকে এই পার্কের দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার। বাইক নিয়ে রেলগেট থেকে পার্কে যেতে বেশি সময় লাগবে না। রেলগেট মোড় থেকে উত্তর দিকে যে রাস্তা চলে গেছে সেটি হল রাজশাহী- নওগাঁ হাইওয়ে। সেই হাইওয়ে ধরে প্রায় ৩ কিলোমিটার পর বাংলাদেশের একমাত্র পোস্টাল একাডেমীর প্রধান গেইট চোখে পড়বে এই পোস্টাল একাডেমীর গেইট থেকে হাতের ডান দিকে যে রাস্তা চলে গেছে সেটাই মূল জিয়া শিশু পার্ক যাবার প্রধান রাস্তা।অন্যদিকে নওগাঁ থেকে যদি কেউ আসতে চান তাহলে আমচত্তর পার হয়ে নওদাপাড়া বাজার পার হয়ে পোস্টাল একাডেমীর মোড় থেকে হাতের বাম দিকে যে রাস্তা গেছে সেটা দিয়েও যাওয়া যায় শহীদ জিয়া শিশু পার্ক। রেলগেট থেকে পার্কে যেতে চোখে পড়বে জেলা স্টেডিয়াম, বিজিবি হেড অফিস, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ( আরডিএ) ভবন, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এর ঠিক সামনেই রয়েছে পোস্টাল একাডেমী এবং এই পোস্টাল একাডেমীর মোড় থেকে হাতের ডান দিকের রাস্তা দিয়ে গেলে শহীদ জিয়া শিশু পার্ক।

1607148811_Tour-bilkumari.jpg
বিল কুমারী ও নাইস গার্ডেন

রাজশাহীর তানোর উপজেলা সদরের পাশেই বিল কুমারী বিল। পানিতে মাছ, আর উপরে পাখির অবাধ বিচরন। যেন মাছ আর পাখির মিলিত এক অভয়াশ্রম। তানোর উপজেলার প্রকৃতি আর জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে বিল কুমারী । শিব নদী আর এই বিল যেন অভিন্ন শরীর। এই নদী বয়ে গেছে এর মাঝখান দিয়ে। আরও দু-তিনটি নদীর নিবিড় প্রেম এই বিল কুমারীর সঙ্গে। সারা বছর বিলজুড়ে দুই ধরনের কর্মযজ্ঞ দেখা যায়- মাছ ধরা আর ধানের চাষ। বর্ষায় নদী আর বিল মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। যত দূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। শীতে শুকিয়ে যায় এর অধিকাংশই। এই বিলের এক পাশে রয়েছে মাছের অভয়ারণ্য। সেখানে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা চলে। এই অভয়ারণ্যে নির্বিঘ্নে মাছ ডিম পাড়ে, বড় হয়ে ওঠে। অভয়ারণ্যের অন্য পাশে সারা বছর মাছ ধরেই চলে জেলেদের দৈনন্দিন জীবন কিন্তু বছরে এক দিন জেলেরা মাছ ধরতে পারেন এই অভয়ারণ্যে। বিল কুমারী বিলের পাখির কথা না বললেই নয়। পানকৌড়ি, বখাচোখী, গাঙচিল, গাঙ শামুখখোলা, বক, নারিকেল হাঁসসহ নানা জাতের পাখির দেখা মেলে। বিলের এপাশ থেকে ওপাশে চলাচলের জন্য বিলের মাঝখান দিয়ে রয়েছে একটি সড়ক এবং এই সড়কের মাঝখানে বিলের পানি যাতায়াতের জন্য রয়েছে একটি ব্রিজ। বর্ষা মৌসুমে ছুটির দিনে এই ব্রীজে অনেক মানুষের আনাগোনা দেখা যায় এবং এই ব্রিজের উপর উঠে চারপাশে তাকালে শুধু পানি আর পানি। দেখে মনে হয় যেন কোন দ্বীপের উপর দাড়িয়ে পানিগুলোর চলাফেরা উপভোগ করছি।

রাজশাহী থেকে বিল কুমারী বিলে আসতে হলে আপনাকে অবলম্বন করতে হবে রাজশাহী- নওগাঁ হাইওয়ে। রেলগেট থেকে সোজা উত্তরে যে রাস্তাটি গেছে সেটা দিয়ে সামনে যেতে যেতে বায়া মোড় পরবে। এই বায়া মোড়ের আগে পরবে আমচত্ত্বর, ভুগরইল তারপরে বায়া। বায়া মোড় থেকে হাতের বাম দিকে যে রাস্তা চলে গেছে সেটিই রাজশাহী- তানোর যাবার প্রধান সড়ক। এই সড়ক ধরে প্রকৃতির সৌন্দ্রর্য্য দেখতে দেখতে তানোর পাবার আগে তালন্দ মোড় পরবে সেই তালন্দ মোড় থেকে ইটের রাস্তা ধরে সামনে এগুতে এগুতে চোখে পড়বে বিল কুমারীর অপার দৃশ্য। টানা বাইক করে এসে যদি কারো এই বিলের বাতাস শরীরে দোলা দেয় তাহলে সে শরীর নিমিষেই চাঙ্গা হয়ে উঠে। বাইকারদের জন্য মন জুড়ানো একটি স্থান এই বিল কুমারী বিল।

1607149160_Tour-nice garden.jpg
নাইস গার্ডেন

রাজশাহী শহর থেকে ১৫ কিমি দূরে রাজশাহী-তানোর মহাসড়কের পাশে চান্দুরিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত নাইস গার্ডেন । প্রতিদিন অনেক মানুষ এখানকার সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য আসেন বিশেষ করে ছুটির দিনে মানুষের আনাগোনা অনেক বেশি হয়। নাইস গার্ডেন ব্যাক্তি মালিকানায় তৈরিকৃত সৌন্দর্যে ভরপুর, কৃত্রিমভাবে তৈরি দর্শনীয় স্থান। এখানে অনেক সুন্দর সুন্দন স্থাপনা রয়েছে এবং বিশাল এক দীঘি রয়েছে যেখানে নিজেই প্যাডেল নৌকা ভাড়া নিয়ে ঘুরা যায়। রাজশাহী থেকে নাইস গার্ডেন যেতে গলে আপনাকে বাইক নিয়ে রেলগেট শহীদ কামারুজ্জামান চত্বরে আসতে হবে এরপর রাজশাহি-নওগা হাইওয়ে ধরে সামনের দিকে এগুতে হবে। যেতে যেতে বায়া মোড় পড়বে এই বায়া মোড় থেকে হাতের বাম দিক দিয়ে যে রাস্তা গেছে সেটাই মুলত রাজশাহী-তানোর হাইওয়ে। এই হাইওয়েতে ধরে প্রায় ৮ কিমি যেতেই রাস্তার ঠিক ডান পাশ্বে দেখতে পাবেন নাইস গার্ডেন।

1607149946_Tour-bagha.jpg
বাঘা মসজিদ

বাঘা মসজিদ সুলতান নাসিরউদ্দিন নুসরাত শাহ ১৫২৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করেন। এটি রাজশাহী জেলা শহর থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে অবস্থিত । বাঘা মসজিদটি হুসেন শাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন শাহের পুত্র সুলতান নুসরাত শাহ ১৫২৩-১৫২৪ সালে (৯৩০ হিজরি) নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে এই মসজিদের গম্বুজগুলো ভেঙ্গে গেলে ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদে নতুন করে ছাদ দেয়া হয় ১৮৯৭ সালে। মসজিদটি ২৫৬ বিঘা জমির ওপর অবস্থিত। সমভুমি থেকে থেকে ৮-১০ ফুট উঁচু করে মসজিদের আঙিনা তৈরি করা হয়েছে। উত্তর পাশের ফটকের ওপরের স্তম্ভ ও কারুকাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। মসজিদটিতে ১০টি গম্বুজ আছে । আর ভেতরে রয়েছে ৬টি স্তম্ভ। মসজিদটিতে ৪টি মেহরাব রয়েছে যা অত্যন্ত কারুকার্য খচিত। মাঝখানের দরজার ওপর ফার্সি ভাষায় লেখা একটি শিলালিপি রয়েছে। মসজিদটির গাঁথুনি চুন-সুরকি দিয়ে। মসজিদটিতে সর্বমোট ১০টি গম্বুজ, ৪টি মিনার (যার শীর্ষদেশ গম্বুজাকৃতির) এবং ৫টি প্রবেশদ্বার রয়েছে। মসজিদের ভিতরে-বাইরে সবর্ত্রই টেরাকোটার নকশা বর্তমান। মসজিদের পাশে অবস্থিত বিশাল দিঘীও একটি দর্শনীয় স্থান। এছাড়া মসজিদ চত্ত্বরের পার্শ্বেই রয়েছে একাধিক পীর আউলিয়াগনের মাযার । পোড়ামাটির অসংখ্য কারুকাজ যার ভেতরে রয়েছে আমগাছ, শাপলা ফুল, লতাপাতাসহ ফার্সি খোদাই শিল্পে ব্যবহৃত হাজার রকম কারুকাজ। এছাড়া মসজিদ প্রাঙ্গণের উত্তর পাশেই রয়েছে হজরত শাহদৌলা ও তার পাঁচ সঙ্গীর মাজার। বাংলার স্বাধীন সুলতান আলাউদ্দিন হুসাইন শাহর পুত্র নাসিরউদ্দীন নসরত শাহ জনকল্যাণার্থে মসজিদের সামনেই একটি দিঘী খনন করেন। শাহী মসজিদ সংলগ্ন এ দিঘিটি ৫২ বিঘা জমির ওপর রয়েছে। এই দিঘির চারপাশে রয়েছে সারিবদ্ধ নারিকেল গাছ। প্রতিবছর শীতের সময় এ দিঘিতে অসংখ্য অতিথি পাখির কলতানে এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে।

বাঘা মসজিদ বাইকে চেপে যাওয়া অনেক সহজ। রাজশাহী শহর থেকে তালাইমারি মোড় হয়ে রাজশাহি-নাটোর হাইওয়ে অবলম্বন করে যেতে হবে । রাজশাহী- নাটোর হাইওয়ে ধরে যেতে যেতে বেলপুকুর রেলক্রসিং পড়বে এবং তারপরে ৩ কিমি যেতে একটি বিশাল বাজার পাবেন যার নাম বানেশ্বর বাজার। এই বানেশ্বর বাজার আম কেনা-বেচার জন্য অনেক বিখ্যাত। এই বানেশ্বর বাজার থেকে নাটোর এর দিকে যেতে সামনেই ট্র্যাফিক মোড় পড়বে সেই ট্র্যাফিক মোড় থেকে হাতের ডান দিকে লক্ষ্য করলে দেখতে পাবেন একটি রাস্তা চলে গেছে যেটা চারঘাট,বাঘা, লালপুর হয়ে একদম ঈশ্বরদী গিয়ে ঠেকেছে। এই রাস্তা ধরে প্রায় ২২ কিমি এর পথ। এই পথ ধরেই আপনাকে যেতে হবে বাঘা মসজিদে। অন্যদিকে নাটোর থেকে যারা এই মসজিদে যেতে চান তারা নাটোর লালপুর হয়েও আসতে পারেন কিংবা বানেশ্বর বাজার থেকে রাজশাহী যেতে ট্র্যাফিক মোড় থেজে হাতের বাম দিকের রাস্তা ধরেও যেতে পারেন।
Rate This Tips

Is this tips helpful?

Rate count: 3
Ratings:
Rate 1
Rate 2
Rate 3
Rate 4
Rate 5

Bike Tips

বন্যা পরিস্থিতিতে বাইকের যত্ন নেয়ার কিছু টিপস
2024-08-27

বর্তমানে দেশে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, এবং দেশের বেশ কিছু অঞ্চল ডুবে গিয়েছে, পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক এলাকায় মানুষের বাড়িঘর থেকে সবকিছুই ডুবে গেছে, এই পরিস্থিতে আপনার বাইকের যত্ন নেয়া খুবই কষ্টসাধ্য একটি বিষয়, তবুও আমাদের পক্ষে সম্ভব হলে চেষ্টা করতে হবে বাইকের যথাসম্ভব যত্ন ...

Bangla English
মোটরসাইকেল দীর্ঘদিন ব্যবহার না করলে কি কি সমস্যা হতে পারে
2024-07-28

মোটরসাইকেল দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিস হয়ে থাকলেও বিভিন্ন কারনে অনেক সময় মোটরসাইকেল দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হয় না, যেমনটা আমরা লকডাউন এর সময়ে দেখেছি, এবং খুব সম্প্রতি দেশের যেই অবস্থায় তাতে অনেকেই বাইক বের করতে পারছে না। একটি বাইক অনেকদিন ব্যবহার না করলে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। আজকে আমরা আলোচনা কর...

Bangla English
রাতের বেলা কেনো বাইক নিয়ে ট্যুর দেয়া উচিত না
2024-07-25

বাইকপ্রেমি বাইকারস যারা ট্যুর দিতে পছন্দ করে থাকেন, তারা অনেকেই রাতের বেলায় বাইক রাইড করে ট্যুর দিয়ে থাকেন, তবে হাইওয়েতে বেশিরভাগ রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো নেই, এছারা ও বিভিন্ন কারণে অনেকেই রাতে ট্যুর দিয়ে থাকেন, তবে বাংলাদেশের রাস্তা এবং সার্বিক সবকিছু বিবেচনা করে রাতে ট্যুর দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু বাধা বিপত...

Bangla English
কিভাবে বাইকের অপ্রয়োজনীয় সাউন্ড কমাবেন
2024-07-15

স্বাভাবিক ভাবে একটি বাইক চলন্ত অবস্থায় তার ইঞ্জিনের সাউন্ড বাইকের সাইলেন্সর দিয়ে বের হয়, এবং সাইলেন্সর দিয়ে বাইকের সাউন্ড কমানো হয়ে থাকে এবং সাউন্ড শুনতে ভালো লাগে, তবে বাইকের অন্যান্য যন্ত্রাংশ দিয়েও বিভিন্ন সাউন্ড আসতে পারে, ঠিক মতো পরিচর্যা না করার ফলে বাইকের বিভিন্ন অংশ থেকে এমন সাউন্ড হয়ে থাকে, ...

Bangla English
ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনের সময় অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করবেন কি না
2024-07-14

একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর আমাদের বাইকের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতে হয়, আমরা নিকটস্থ সার্ভিস সেন্টার বা মেকানিকের কাছে গিয়ে থাকলে তারা ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করে দিয়ে থাকে, তবে অনেক ব্র্যান্ডের সার্ভিস সেন্টারে গেলে তারা ইঞ্জিন অয়েলের সাথে অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়ে থাকে, এতে করে আমাদের খরচ ...

Bangla English
Filter

Filter