রাতে মোটরসাইকেল চালানোর টিপস
অনেকেই প্রয়োজনে বা শখে রাতে রাইড দিয়ে থাকেন। দূরের জার্নির জন্যও অনেকে রাতকে বেছে নেন রাইডের জন্য। আবার অনেকে যানজটবিহীন শান্ত রাইডের জন্যও রাতকে বেছে নেন। প্রয়োজন যাইহোক কিছু বিষয় খেয়াল রাখলে রাইতের রাইড নি:সন্দেহে তৃপ্তিকর। আসুন জেনে নেই রাতের রাইডে কি কি বিষয় খেয়াল রাখা উচিত।
একা রাইড করবেন না
রাতের রাইডে সম্ভব হলে একা রাইড করবেন না। সাথে আরেকজন নিন, যিনি বাইক চালাতে পারেন। গ্রুপ রাইড হলে খুবই ভালো। একা রাইড করতে হলে বেশি পরিমানে সতর্ক থাকতে হবে। সম্ভব হলে কোন যাত্রীবাহী বাসের পেছনে নিরাপদ দূরত্বে থেকে রাইড করতে পারেন।
অপ্রয়োজনে রাইডের পথ কাউকে বলবেন না
কোন পথ দিয়ে রাইড করবেন তা অপ্রয়োজনে কাউকে বলা থেকে বিরত থাকুন, এতে অনাকাংখিত বিপদ এড়ানো সম্ভব হবে। জরুরী প্রয়োজনে ফোন করার জন্য প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর সাথে রাখুন।
পর্যাপ্ত আলো রাখুন
হেডলাইটের আলো যেন পর্যাপ্ত থাকে সেদিকে সতর্ক থাকুন। কম আলোর হেডলাইট নিয়ে রাতের রাইডে যাবেন না। আমাদের দেশে আসা অধিকাংশ বাইকের আলো পর্যাপ্ত নয়। রাতের রাইডের অভ্যাস থাকলে বা প্রয়োজন হলে শক্তিশালী আলোর ব্যবস্থা করে নিতে হবে।
পর্যাপ্ত জ্বালানী রাখুন
গন্তব্যের দূরত্ব অনুযায়ী বাইকে জ্বালানি ভরে নিবেন। পথিমধ্যে তেল শেষ হওয়া বা তেল ভরার প্রয়োজন না যেনো না পড়ে।
অপরিচিত রাস্তায় যাবেন না
কোনভাবেই অপরিচিত রাস্তায় রাইড করবেন না। প্রয়োজনে পূর্বেই গুগলম্যাপ ব্যবহার করে রাস্তার সঠিক ধারনা নিবেন। সেই রাস্তায় অভ্যস্ত কারো কাছে জেনে নিতে পারেন। বিশেষকরে স্পীডব্রেকার, ভাংগা রাস্তা-ব্রীজ, খারাপ বাঁক ইত্যাদি সম্পর্কে ধারনা নিতে হবে।
টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করুন
রাতের রাস্তায় টায়ারজনিত সমস্যা এড়াতে টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করুন বা টায়ারে জেল ব্যবহার করুন। ছিনকারীর ফেলে রাখা পেরেক হোক বা এমনিতেই হোক টায়ার যেন পাংকচার না হয়।
সেফটি গিয়ারস ব্যবহার করুন
এক্সিডেন্ট বা ছিনতাই এর হাত থেকে বাচার জন্য প্রয়োজনীয় সেফটিগিয়ার ব্যবহার করুন। ফুলফেস হেলমেট, গ্রাভস, বডি আর্মর, নি-গার্ড ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। উজ্বল রং এর পোশাক পরবেন যেনো অন্য চালক সহজেই আপনাকে দেখতে পায়। প্রতিনিয়ত লুকিং গ্লাসে পেছনের নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে নিবেন। কোনো প্রকার সন্দেহ দেখা দিলে রাস্তার পাশের পেট্রোল পাম্প বা জনবহুল বাজার থাকলে সেখানে বিরতি দিতে হবে।
ছোটখাটো স্পেয়ার পার্টস সাথে রাখুন
রাতের রাইডের আরেকটি সমস্যা হলো বাইকের সমস্যায় কোন সাহায্য পাওয়া যাবে না। তাই এক্সিলারেটরের তার, স্পার্ক প্লাগ ইত্যাদি সাথে রাখুন। বাইকের যে কোনো সমস্যায় থামতে হলে জনসমাগমযুক্ত এলাকাতে থামুন। ছোট টর্চলাইট রাখতে পারেন।
যত গতি তত ক্ষতি
বাইক গতিরই বাহন আর রাতের নিরিবিলি রাস্তায় আপনাতেই বেশি গতি উঠে যায়। তবুও নিরাপত্তার স্বার্থেই সীমিত গতিতে বাইক চালাতে হবে। বেশি গতির দুর্ঘটনা আর কম গতির দুর্ঘটনার ফলাফল কখনই একই নয়।
অপরিচিত কাউকে লিফট দিবেন না
বিপদে অপরকে সাহায্য করাই মানবতা। সমস্যা হলো এই বিষয়টিকে কেন্দ্র করেই দুষ্টুলোক তাদের কাজগুলো বেশি করে থাকে। অপরিচিত কাউকে বাইকে তুলবেন না। রাস্তায় কাউকে বিপদে দেখলে রাস্তার টহল পুলিশকে জানাতে পারেন। নিজের জীবনের ঝুকি নিয়ে অন্যকে সাহায্য করা, সেটি ভিন্ন কথা।
নির্জন রাস্তায় থামবেন না
যে কারনেই হোক নির্জন রাস্তায় বাইক থামাবেন না, বাইকের গায়ে কিছু লাগলো, বা টায়ারে কিছু আটকে গেলো এরকম হলে বরং যতদ্রুত সম্ভব সেই এলাকা ত্যাগ করুন। ছিনকারীর সম্ভবনাই বেশি। কোন কারনে রাস্তায় কারো সাথে অহেতুক বিতর্ক বা ঝগড়ায় জড়াবেন না, হতে পারে সেটি বাইক ছিনতাইয়ের ফাঁদ।
অপরিচিত লোকের দেয়া খাবার খাবেন না
পথিমধ্যে কোথাও যাত্রা বিরতি দিলে অপরিচিত কোনো লোকের দেয়া কিছু খাবেন না। এমনকি অনেকেই যাচ্ছে এমন খাবার দোকান থেকেই খাওয়া সেরে নিন। নিরিবিলি দোকানে যাবেন না।
ছিনতাই এর কবলে পড়লে
কোনমতেই তাদের সাথে বিতর্কে যাবেন না, বাধা দিবেন না। বিনা প্রতিবাদে বাইক দিয়ে দিবেন। সামান্য প্রতিবাদও জীবনের ঝুকির কারন হতে পারে। বাইক ছিনতাই যদি হয়েই যায় তাহলে থানায় জিডি করতে দেরী করবেন না। বাইক ফেরত পাবার জন্য নয়, বরং আপনার বাইক ব্যবহার করে বেআইনী কাজ করে ধরা পড়লে অন্তত আপনি যেনো ফেসে না যান।
সবশেষে
বিপদ বলে আসে না। তবে প্রস্ততি থাকলে বিপদ এড়ানো যায়। তাই রাতের রাইডে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে বিপদ এড়ানো যায় বা কম ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়। হ্যাপি রাইডিং।