বজ্রপাতের সময় বাইক চালানোর নিরাপত্তা টিপস
রিপোর্ট বলছে যে বর্তমান সময়ে বব্যার থেকেও বজ্রপাতে মানুষ মারা যাবার সংখ্যাটা আশংকাজনক বেশী। কিছুদিন পুর্বে “রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির” একটি রিপোর্ট বলছে যে এই বছর (জানুয়ারী – এপ্রিল) ৮৪ জন মানুষ মারা গেছে বজ্রপাতে আক্রান্ত হয়ে আত এই ব্যাপারটাকে অত্যন্ত্ব গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে সরকার এবং অন্যান্য অলাভজনক সেবামুলক প্রতিষ্ঠান সাধারন মানুষদের সতর্ক করে আসছে বজ্রপাতের সময় করনীয় নিয়ে। একই সাথে তারা এপ্রিল – জুন মাস পর্যন্ত সময়টাকে চিহ্নিত করেছে সবচেয়ে বেশী বজ্রপাতের সসময় হিসেবে। এই সময়ে বজ্রপাতের ব্যাপারটা সত্যিই বড় রকমের একটা চিন্তার কারন হয়েছে মুলত মাত্রাতিরিক্ত বজ্রপাত এবং অনাকাংক্ষিত মৃত্যুর কারনে। এখানে আমরা কিছু কার্যকরী টিপস আপনাদের সামনে তুলে ধরবো যা আমরা আশা করি যে আপনাকে এমন বিপদ থেকে অনেকাংশে রক্ষা করবে যদি কখনও অনাকাংক্ষিতভাবে আপনি এমন দুর্যোগের মধ্যে পড়ে যান। যেহেতু বাইকার হিসেবে বেশিরভাগ সময় আপনাকে পথেই থাকতে হয় সেক্ষেত্রে আপনাকে ততসংশ্লিষ্ট পরামর্শই আমরা দিবো যেন প্রয়োজনে আপনি তা সহজেই কাজে লাগাতে পারেন।
- প্রথমত যেমনটা রিপোর্ট বলছে যে এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত বজ্রপাতের সবচেয়ে বিপদজনক সময় সে ক্ষেত্রে সবার আগে আপনার উচিত হবে এই সময়ে যখনই আপনি আকাশে কালো মেঘ দেখতে পাবেন বাড়িতে অবস্থান করবেন যদি না জীবন বাচানো এবং জীবন যাওয়ার অবস্থা উপক্রম হয়।
- যেকোন বিল্ডিং এর ভেতর চাইলে আশ্রয় নিতে পারেন কিন্তু কোনভাবেই উচু কোন টাওয়ারে গিয়ে দাড়াবেন না।
- আপনি বাড়িতে থাকা অবস্থায় যদি খেয়াল করেন যে কালো মেঘ জমেছে এবং বিকট শব্দ করাও শুরু হয়েছে কিন্তু আপনাকে বাইরে যাওয়াই লাগবে সেক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হলো এমন একটা ছাতা ব্যবহার করা যেটাতে প্লাস্টিক বা কাঠের হাতল ব্যবহার করা হয়েছে সাথে অবশ্যই আপনার পায়ে গামবুট ব্যবহার করবেন।
- কোনভাবেই খোলা মাঠে আশ্রয় নিবেন না, বড় কোন গাছের নিচে আশ্রয় নিবেন না, কোন বৈদ্যুতিক পিলারের নিচেও না একই সাথে এমন কোন বস্তুর নিচে বা সাথে আশ্রয় নিবেন না যা বিদ্যুৎ পরিবাহী।
- বড় কোন গাছের নিচে তো আশ্রয় নিবেনই না যদি কোন গাছের নিচে আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে তবে ৪ মিটার দুরুত্ব বজায় রেখে দাড়াবেন।
- যদি কোন বৈদ্যুতিক লাইনে গোলযোগ দেখতে পান তবে তা থেকে যথাসম্ভব দুরুত্ব বজায় রেখে চলুন।
- পুকুর বা জলাধারের থেকে সবসময় নিরাপদ দুরুত্ব বজাত রাখুন।
- যদি আপনি পথে আপনার বাহনসহ বজ্রপাতে আক্রান্ত হউন তবে চেষ্টা করুন গ্যারেজ বা কোন কংক্রিট বিল্ডিং এর নিচে আশ্রয় নেওয়ার। কোনভাবেই আপনার বাহনের ধাতব অংশের সংস্পর্শে থাকবেন এমনকি কাচের সাথে না।
- সেল ফোন বন্ধ রাখাটা সবচেয়ে ভাল হবে। বজ্রপাতের সময় কোনভাবেই নিজের ফোন ব্যবহার করবেন না।
যেহেতু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছি যারা বাইকের সাথে অভ্যস্ত এবং এমন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে আমাদের যে মোকাবেলা করতে হবে না তা চিন্তা করাটা কিন্তু মোটেই উচিত হবে না। আপনি চাইলে নিম্নে বর্নিত কিছু টিপস খেয়াল করতে পারেন যা আপনাকে অনেক বড়ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে পারে। যেমনটা আমরা সবাই খেয়াল করছি যে ইদানিং ঋতুর বড়ধরনের একটা পরিবর্তন এসেছে যার কারনে বজ্রপাতের এখন আর দিন কি রাত নেই এমন কি কোন স্থান কালও নেই। তাই আমাদের এই ধরনের দুর্যোফের ব্যাপারে পুর্ব সতর্ক থাকতে থাকতে হবে। বেশিরভাগ সময়ই আমরা আমাদের প্রতিদিনের কর্মে বেরিয়ে পড়ি অনেক সময় এ ব্যাপারটা খেয়াল করেও যে বাইরে বজ্রপাত হচ্ছে আবার নিজেদের নিরাপত্তার কথাও চিন্তা করি না। এক্ষেত্রে আমরা কিছু টিপস আপনাদের জন্যে তুলে ধরছি যা আপনাদের জন্যে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারে যদি অনাকাংক্ষিত আপনি বজ্রপাতের মধ্যে পড়ে যান।
- ভালমানের রেইনকোর্ট ব্যবহার করবেন কারন এটা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে বাইক চালানোর সময় এবং নিরাপত্তাও বেশ ভাল দিবে। একই সাথে এটা আপনাকে রাস্তার নোংরা পানি থেকে দূরে রাখবে যা ভারী গাড়ীর চাকা থেকে ছুটে আসে।
- খুব ভালমানের ফুলফেস হেলমেটের ব্যতক্রম কিছুই নেই এবং আমি মনে করি যে আপনারা সবাই উক্ত ব্যাপারের সাথে সম্যক অবগত যে আমি কেন এই ব্যাপারটা তুলে ধরলাম।
- সে সমস্ত জুতা বা স্যান্ডেল ব্যবহার করবেন না যেটাতে স্লিপ করে অথবা পানি ধরে।
- টায়ারে পাম্পের প্রেসার কিছুটা কমিয়ে রাখবেন এতে করে চাকার গ্রিপ বেশ ভাল পাবেন।
- সঠিকভাবে দৃশ্যমান হউয়ার জন্যে হেডলাইট অন রাখুন
- কখনই কোনভাবেই ৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টার গতি পার করবেন না যখনই আপনি কোন ভেজা রাস্তায় বাইক চালাবেন।
- আপনার উচিত হবে বৃষ্টি ভেজা দিনে বাইক নিয়ে বের হউয়ার আগে ব্রেকিং সিস্টেম চেক করে নেওয়া কারন ভেজা রাস্তায় এবং ভিজে যাওয়া চাকায় ব্রেকিং সিস্টেম তার সাধারন কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এমনকি আপনার মোটরসাইকেল দুটা ব্রেক চেপে ধরার পরও অনেক সময় থামবে না এবং মাই সেক্ষেত্রে ইঞ্জিন ব্রেক ব্যবহার করি একই সাথে আমি মনে করি যে আপনারও উচিত হবে উক্ত ব্যাপারে সতর্ক হউয়া।
- আপনি রাস্তায় থাকা অবস্থায় যদি বজ্রপাত শুরু হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে আপবার উচিত হবে আপনার বাইক নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়া কারন আপনার বাইকের প্রায় সকল পার্টসই হল বিদ্যুৎ পরিবাহী।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা ইঞ্জিন ব্রেকের সাথে তেমন পরিচিত না আবার শুরুর দিকে আপনি এটা চেষ্টা করতে যেয়ে বিরক্তি অনুভব করতে পারেন কিন্তু পরবর্তীতে আপনি পারবেন। ফেসবুকের অনেক গ্রুপে ইঞ্জিন ব্রেক নিয়ে অনেক পোস্ট আছে যা আপনি চাইলেই খুজে পেতে পারেন। এখানে আমি নিজেও সংক্ষেপে তা তুলে ধরলামঃ আপনি যখনই ৪৫-৫০ কিলমিটার প্রতি ঘন্টা গতি তুলে ফেলবেন এবং আপনার গতি কমানোর প্রয়োজন হবে, শুধুমাত্র পিক আপটা হালকা করে ছেড়ে দিবেন এবং আপনার চাহিদা মত গতিতে না আসা পর্যন্ত পিক ধরবেন না এবং এই প্রসেসটাকেই বলে ইঞ্জিন ব্রেক। বলা বাহুল্য যে এটি একটি নিরাপদ প্রক্রিয়া এবং আপনার বাইকের ইঞ্জিন কোনভাবেই কোন ক্ষতি হবে না।
আপনার নিজের নিরাপত্তা নিজে নেওয়ার চেয়ে বড় কোন নিরাপত্তা নেই। কারন আমরা বাইকার এবং বাইক হলো রাস্তার সবচেয়ে ঝুকিপুর্ন যানবাহন তাই আপনাকে আপনার শতভাগ নিরাপত্তার কথা আগে চিন্তা করতে হবে বাকিটা আল্লাহ ভাল জানে।