শীতকালে কুয়াশায় বাইক চালানোর ক্ষেত্রে সতর্কতা
বর্তমানে দেশে তীব্র শীত অতিবাহিত হচ্ছে, এর সাথে বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায়শই কুয়াশা দেখা দেয়, এর ফলে বাইক সহ অন্যান্য যানবাহনের চলাচল অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে, কারন তীব্র কুয়াশার কারনে শহর এবং মহাসড়কে রাস্তায় বেশি কিছু দেখা যায় না, এর ফলে প্রতিনিয়ত মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটছে, আজকে আমরা আলোচনা করবো, তীব্র কুয়াশায় বাইক চালানোর ক্ষেত্রে কি কি সতর্কতা অবলম্বনে আপনি দুর্ঘটনার থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
প্রথমত আমাদের দেশে ডিসেম্বর এবং জানুয়ারী মাসের সময় বেশি শীত এবং কুয়াশা দেখা দেয়, শহর অঞ্চলে সেভাবে নাহলেও মহাসড়কে এর তীব্রতা আমরা দেখতে পাই, এবং এর কারনে শুধু বাইকার নয় প্রায় সকল ধরনের চালক এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন।
এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণের কিছু উপায় এবং সতর্কতা উল্লেখ করা হলোঃ
1. কুয়াশার মধ্যে সবসময় হেডলাইট অন করে রাখাঃ মহাসড়কে রাইড এর সময় বাইকের হেডলাইট অন করে রাখলে এটি আপনার Visibility অনেকাংশে বৃদ্ধি করে, এর ফলে দূর থেকে পথচারী এবং অন্যান্য যানবাহনের চালকেরা আপনাকে সহজে দেখতে পায় এবং এর মাধ্যমে দুর্ঘটনা কমিয়ে নিয়ে আসা সম্ভব।
2. পিনলক ভাইসর ব্যবহার করাঃ শীতকাল এবং বর্ষাকালে একটি খুবই কমন সমস্যা দেখা দেয়, যেটি হলো হেলমেটের ভাইসর ঘোলা হয়ে যাওয়া, তবে শীতকালে এই সমস্যা অত্যাধিক পরিমানে দেখা যায়, এবং এর কারনে স্পষ্ট ভাবে কোনো কিছু দেখা যায় না, ফলস্বরূপ প্রায়শই বিভিন্ন দুর্ঘটনার খবর আমরা শুনতে ও দেখতে পাই, এর থেকে পরিত্রাণের উপায় হিসাবে আপনি পিনলক ভাইসর ব্যবহার করতে পারেন, পিনলক যেটা করে এটি হেলমেটের ভাইসর এর উপর ব্যবহারের ফলে একটি নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত কুয়াশা জমে না, আপনি বেশ স্পষ্ট ভাবে সব কিছু দেখতে পাবেন।
3. নিরাপদ গতি মেনে বাইক চালানোঃ সাধারণত শীতকালে বাইরে যানবাহন কম দেখা যায় এবং সন্ধা কিংবা রাতে এর পরিমান আরো কমে যায়, এবং অনেকেই তখন একটু স্পিডে রাইড করতে পছন্দ করেন, তবে যেহেতু কুয়াশার কারনে ইতিমধ্যে দুরের জিনিস স্পষ্ট দেখা যায় না, তাই আপনি চাইলে ও অনেক ক্ষেত্রে ব্রেক করে বাইক নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন না, এবং যেহেতু কুয়াশার কারনে রাস্তা পিচ্ছিল থাকে তাই সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে জোরে ব্রেক করলে বাইক স্কিড করার, তাই নিরাপদ গতি ও Braking Distence বজায় রেখে বাইক রাইড করুন।
4. ইনডিকেটর এবং পাস লাইটের সঠিক ব্যবহারঃ হাইওয়েতে বাইক রাইডের সময় স্বাভাবিক ভাবেই বাইকের স্পিড কিছুটা বেশি থাকে তবে সঠিক নিয়ম মেনে রাইড করলে তা অবশ্যই আপনাকে নিরাপদ রাখবে, কুয়াশার মধ্যে বাইক রাইডের সময় অবশ্যই বাইকের ইনডিকেটর এর সঠিক ব্যবহার করবেন এবং বিভিন্ন মোড়ে ও বাকে পাস লাইট ও হর্ন এর প্রয়োগ করবেন, এতে করে ট্রাক বাস ও বড় যানবাহন চালকেরা আপনার উপস্থিতি সম্পর্কে জানতে পারবে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত যেকোনো কিছু থেকে আপনি নিরাপদ থাকবেন।
5. অভারটেক পরিহার করাঃ আমাদের দেশে অধিকাংশ মহাসড়ক TWO WAY রোড, অর্থাৎ রাস্তার মাঝে কোনও Divider নেই, এই ধরনের রাস্তায় অভারটেক করা এমনিতেই বিপদজনক, যদিও নিয়ম মেনে অভারটেক করা নিরাপদ তবে কুয়াশার দিনে এটি থেকে বিরত থাকা ভালো।
6. বাইক রাইডিং এর প্রয়োজনীয় সব পরিধান করাঃ এটি সতর্কতা মুলক কিছু না হলেও গুরুত্বপূর্ণ, কারন হ্যান্ড গ্লোভস, জুতা এবং পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরিধান না করলে কোনো দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আপনার ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা বেশি হবে, এছাড়াও অতিরিক্ত শীতের কারনে অনেকে হাতে ঠাণ্ডা অনুভব করায় ঠিকমতো ব্রেক করা বা অন্যান্য কিছু ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারে না, অবশ্যই বাইক রাইডিং এর সময় উল্লেখ সকল কিছু পরিধান করেই বাইক রাইড করবেন।
7. মাটির রাস্তায় সাবধানতা অবলম্বনঃ কুয়াশার কারনে মাটির রাস্তা অত্যাধিক পিচ্ছিল হয়ে যায় এবং এর জন্য বাইকে ব্রেক করলেই অনেকাংশে বাইক থেকে পরে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে, তাই চেষ্টা করবেন মাটির রাস্তা যথাসম্ভব পরিহার করা, আর যদি ব্যবহার করতেই হয় তবে নিরাপদ গতি মেনে বাইক রাইড করা।
এই ছিলো শীতকালে কুয়াশার মধ্যে বাইক রাইডিং এর ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণীয় বিষয় যা আমরা সকলেই অবগত, তবে আপনাদের সুবিধার্থে আমরা পুনরায় এসব আপনাদের নিকট তুলে ধরলাম। সকলে সাবধানতার সহিত বাইক রাইড করবেন, এ সম্পর্কিত ও অন্যান্য তথ্যের জন্য আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।