Yamaha Banner
Search

মোটরসাইকেল রাইডিং এর ক্ষেত্রে ২টি গুরুত্বপুর্ন টিপস

2021-04-18

মোটরসাইকেল রাইডিং এর ক্ষেত্রে ২টি গুরুত্বপুর্ন টিপস


1618731627_Two important Tips for bike riding.jpg
মোটরসাইকেল অনেকের কাছে খুবই পছন্দের একটি বাহন এবং নিত্যদিনের যাতায়াতের সঙ্গী। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে অনেকেই আছেন যারা বাইক নিয়েই তাদের দৈনন্দিন কাজগুলো সম্পাদন করে থাকেন। প্রতিদিন বাইকের রাইডের ক্ষেত্রে অবলম্বন করতে হয় বিশেষ নিরাপত্তা। আমরা অনেকেই আছি যারা বাইক রাইড করি কিন্তু বাইক রাইডের জন্য সঠিক নিয়ম জানি না। আজকে আমরা আলোচনা করবো বাইক রাইডের জন্য দুইটি গুরুত্বপুর্ন টিপস এবং সেগুলো হল – ১|লুকিং গ্লাস ব্যবহারের সঠিক নিয়ম এবং ২| ওভারটেকিং করার সঠিক নিয়ম। আমাদের দেশে অধিকাংশ বাইকাররা এখন বাইক নিয়ে দূর দূরান্তে রাইড করছে এবং এক্ষেত্রে তাদেরকে হাইওয়েতে বেশি রাইড করতে হয়। আমাদের দেশের হাইওয়েগুলো তেমন নিরাপদ না । বড় বড় যানবাহনগুলো বেপরোয়া গতিতে চালানোর ফলে মোটরসাইকেলকে তারা তোয়াক্কা করে না বললেই চলে। হাইওয়েতে রাইডের ক্ষেত্রে ওভার টেকিং নিয়ম এবং লুকিং গ্লাসের ব্যবহার জানা অত্যান্ত জরুরী সেই সাথে শহরের রাস্তাগুলোতেও ওভার টেকিং নিয়ম ও লুকিং গ্লাসের ব্যবহার জানা জরুরী। তো চলুন নিচে আলোচনা করা যাক ওভার টেকিং নিয়ম এবং লুকিং গ্লাস ব্যবহার এর সঠিক নিয়ম সম্পর্কে।

ওভার টেকিং নিয়ম

ওভার টেকিং অনেক সময় ঝুঁকি নিয়ে করতে হয়। বিপরীত দিক থেকে আসা বাহনের গতি এবং যে বাহনটি ওভার টেকিং করছেন তার গতি দুইটার সামঞ্জস্য রেখে ওভার টেকিং করতে হয়। আবার ফাকা রাস্তায় ওভার টেকিং ও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে যেমন আপনি যদি আপনার সামনের বাহনকে ওভার টেকিং করেন এবং সে যদি আপনার অবস্থান না বুঝে আপনার দিকে চেপে আসে তাহলে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা অনেক কষ্টসাধ্য। ওভার টেকিং করার জন্য আমরা আপনাদের জন্য কিছু টিপস নিম্নে উল্লেখ করছি।
-রাইডারের কখনই ওভার টেকিং লেন এ একইভাবে অনেকক্ষণ থাকা উচিত নয়।
-সামনের বাহনের লুকিং গ্লাস বরাবর এসে পাস সুইচ দেওয়া এবং বিপরীত দিক থেকে আসা বাহনকে পাসিং লাইট দেওয়া। এই পাসিং লাইট অন্তত ৫ থেকে ৬ বার দেওয়া উত্তম।
-যে বাহনকে ওভার টেকিং করছেন তার থেকে অন্তত ১০০ গজ দূরে অবস্থান করণ। খুব বেশি কাছাকাছি হলে তার মুভমেন্ট দেখুন সে কেমন চালক তারপর বুঝে শুনে ওভার টেকিং করার পদক্ষেপ নিন।
-লুকিং গ্লাসে খেয়াল করুন পেছন থেকে কোন বাহন আপনার থেকেও বেশি গতিতে আসছে কী না ।
-ওভার টেকিং লেন থেকে ওভার টেকিং শেষ হবার কিছু দূর যেয়ে আবার আপনার সঠিক লেনে চলে আসুন।
-কোন টারনিং বা যেখানে রোড সিংন্যাল দেওয়া আছে যে “এখানে ওভার টেকিং করা নিষেধ” সে সমস্ত স্থানে কখনই ওভার টেকিং করতে যাবেন না।
-ভুল দিক বা লেন দিয়ে ওভার টেকিং করবেন না।
-কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্তা কিংবা মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ার সময় ওভার টেকিং করার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন।
-আমাদের দেশের বড় বড় বাহন বিশেষ করে বাসকে ওভার টেকিং করার সময় খেয়াল রাখবেন যে তাদের জানালাগুলো খোলা আছে কী না এবং যদি খোলা থাকে সেক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন কেউ কিছু জানালা দিয়ে বাইরে নিক্ষেপ করছে কী না। যদি খেয়াল করেন যে কেউ কিছু নিক্ষেপ করছে বা জানালা থেকে মুখ বের করে বমি করছে তাহলে ওভার টেকিং না করে নিরাপদ দুরত্বে অবস্থান করুন।
-যানবাহন থেকে যদি অতিরিক্ত পরিমাণে কালো ধোঁয়া বের হয় সেক্ষেত্রে ওভার টেকিং করার সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন।
-বিপরীত দিক থেকে আসা বাহন থেকে নিরাপদ দুরুত্ব বজায় রেখে ওভার টেকিং করুন।
-অনেক সময় দেখা যায় যে বালু কিংবা মাটি নিয়ে ট্রাক রাস্তায় আছে এবং আপনি সেটাকে ওভার টেকিং করতে যাচ্ছেন এমতবস্থায় যদি বালু বা মাটি আপনার শরীরে এসে পড়ে তাহলে সেই ট্রাক থেকে অনেক দূর থাকুন এবং খেয়াল রাখুন কখন আপনি ওভার টেকিং করতে পারবেন। আপনি আপনার সুযোগ মত নিরাপদভাবে সেই ট্রাককে ওভার টেকিং করুন।

লুকিং গ্লাস

বাইক বা যে কোন যানবাহনের জন্য লুকিং গ্লাস অপরিহার্য একটি উপাদান । লুকিং গ্লাস যদি কোন যানবাহন বা বাইকের না থাকলে তাহলে সেটা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ এবং এর জন্য ট্র্যাফিক পুলিশ জরিমানা করতে বাধ্য। দৈনন্দিন বাইক চালানোর ক্ষেত্রে লুকিং গ্লাস খুব সহায়ক একটি ভুমিকা পালন করে থাকে। পেছনের কোন ধরণের যানবাহন আছে, তার পজিশন ঠিক কোন দিকে আছে, কোন দিক দিয়ে পছনের যানবাহন ধেয়ে আসছে এগুলো লুকিং গ্লাসের মাধ্যমে খুব সহজেই নির্নয় করা যায়। নিয়ম মোতাবেক কোন যানবাহন চালানোর সময় লুকিং গ্লাসের দিকে মিনিটে অন্তত ৫ বার খেয়াল করা উচিত। আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বাইক রাইডের জন্য লুকিং গ্লাস অপরিহার্য কারণ আমাদের দেশের রাস্তাগুলো বাইক রাইডের জন্য খুব একটা সুবিধার জন্য। অনেক সময় দেখা গেছে যে কেউ যদি হাইওয়েতে কোন কারণে ধীরে বাইক রাইড করে তাহলে পেছন দিক থেকে আসা বড় বড় যানবাহন স্বজোরে ধাক্কা দিয়ে প্রাণহানির ঘটনা ঘটায়। এরকম আমারদের দেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হয়ে আসছে। তাই আমাদের লুকিং গ্লাসের ব্যবহার জানা খুবই প্রয়োজন। তাই চলুন নিচে লুকিং গ্লাসের প্রয়োজনীয়তা ও ব্যবহার তুলে ধরা যাক।
-একজন রাইডারকে অবশ্যই মিনিটে ৫ বার কিংবা তার অধিক লুকিং গ্লাসের দিকে খেয়ার রাখতে হবে।
-লুকিং গ্লাসের দিকে খেয়ার করার সময় দুই লেনের রাস্তায় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আমাদের দেশে দুই লেনের রাস্তা বেশি এক্সিডেন্ট হয় বেখায়াল্ভাবে রাইডের জন্য। এদিকে চার লেনের রাস্তায় লুকিং গ্লাসের দিকে লক্ষ্য রাখার আগে সামনে উল্টা দিক দিয়ে কোন যানবাহন আসছে কি না সেটা খেয়াল রাখবেন।
-বাইক রাইড করার পূর্বে লুকিং গ্লাসের পজিশন ঠিক করে নিবেন। রাইড চালু করার সময় বিশেষ করে হাইওয়েতে বেশি স্পীডে রাইড করার ক্ষেত্রে লুকিং গ্লাসের পজিশন ঠিক করতে যাবেন না কারণ বাংলাদেশের রাস্তায় যে কোন দিক থেকে যে কোন বাহন চলে আসতে পারে তাই বাইকের স্পীড কমিয়ে বা বাইক থামিয়ে লুকিং গ্লাসের পজিশন আপনার মাপ মত করে নিবেন।
-আপনার রাস্তার লেন পরিবর্তন করার সময় লুকিং গ্লাস দেখে নিন।
-ওভারটেকিং করার পূর্বে লুকিং গ্লাসে দেখে নিন যে আপনার থেকেও বেশি স্পীডে অন্য কোন যানবাহন আসছে কি না এবং ওভার টেকিং শেষ করার পরও এক পলক লুকিং গ্লাসের দিকে খেয়াল করুন।
-ডানে বা বামে মোড় ঘোরার সময় লুকিং গ্লাসের দিকে নজর রাখবেন। অন্যদিকে বাইক থামানো অবস্থা থেকে ইউ টার্ন নিয়ে যদি আবার পেছনের দিকে যেতে চান সে ক্ষেত্রে লুকিং গ্লাসের দিকে ভালোভাবে নজর রাখুন।
-অপরিষ্কার বা পানিতে ভিজে থাকা লুকিং গ্লাস দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ তাই লুকিং গ্লাস পরিস্কার রাখুন এবং পানি জমাট বাধা সাদা আবরণ লেগে থাকার থেকে বিরত রাখুন।
-গতি কমানোর সময় কিংবা একে বারেই থামানোর সময় লুকিং গ্লাসে দেখে নিন পেছন থেকে কোন যানবাহন আসছে কী না।
-বাইক থামানোর পর লুকিং গ্লাসের দিক একবার খেয়াল করে বাইক থেকে নামুন।
-যেকোন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে লুকিং গ্লাসে অবশ্যই দেখে নেবেন সেগুলো হলো- রাস্তার সংযোগস্থলে, বাঁকা পথ বা পথচারীদের পারাপারের জায়গায়, রাস্তার কাজ চলছে এমন জায়গায়, ধীরে চলতে হয় এমন জায়গায় ইত্যাদি।
-লুকিং গ্লাসের দৃশ্যতা যেন আপনার জন্য সুবিধা হয় সে অনুযায়ী আপনার লুকিং গ্লাস মডিফাই ক্রুন প্রয়োজনে ওয়াইড এংগেল লুকিং গ্লাস ব্যবহার করুন এতে কাছে থেকে অনেক দূর পর্যন্ত দেখা যায়।

সবশেষে

ওভার টেকিং করার নিয়ম এবং লুকিং গ্লাসের ব্যবহার দুইটাই আমাদের বাইকের রাইডের জন্য জেনে রাখা দরকার। আমাদের দেশে এমন অনেক বাইকার আছে যারা নাম মাত্র বাইক রাইড করেন এবং লুকিং গ্লাস ও ওভার টেকিং এর নিয়ম সম্পর্কে তারা অজ্ঞ। সে সকল রাইডারকে অবশ্যই রাস্তায় বাইক রাইডের জন্য ওভার টেকিং করার নিয়ম এবং লুকিং গ্লাসের ব্যবহার জানতে হবে। তাহলে আশা করা যায় দুর্ঘটনা অনেকটাই রোধ করা সম্ভব।
Rate This Tips

Is this tips helpful?

Rate count: 4
Ratings:
Rate 1
Rate 2
Rate 3
Rate 4
Rate 5

Bike Tips

বন্যা পরিস্থিতিতে বাইকের যত্ন নেয়ার কিছু টিপস
2024-08-27

বর্তমানে দেশে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, এবং দেশের বেশ কিছু অঞ্চল ডুবে গিয়েছে, পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে যাচ্ছে এবং অনেক এলাকায় মানুষের বাড়িঘর থেকে সবকিছুই ডুবে গেছে, এই পরিস্থিতে আপনার বাইকের যত্ন নেয়া খুবই কষ্টসাধ্য একটি বিষয়, তবুও আমাদের পক্ষে সম্ভব হলে চেষ্টা করতে হবে বাইকের যথাসম্ভব যত্ন ...

Bangla English
মোটরসাইকেল দীর্ঘদিন ব্যবহার না করলে কি কি সমস্যা হতে পারে
2024-07-28

মোটরসাইকেল দৈনন্দিন ব্যবহারের জিনিস হয়ে থাকলেও বিভিন্ন কারনে অনেক সময় মোটরসাইকেল দীর্ঘদিন ব্যবহার করা হয় না, যেমনটা আমরা লকডাউন এর সময়ে দেখেছি, এবং খুব সম্প্রতি দেশের যেই অবস্থায় তাতে অনেকেই বাইক বের করতে পারছে না। একটি বাইক অনেকদিন ব্যবহার না করলে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। আজকে আমরা আলোচনা কর...

Bangla English
রাতের বেলা কেনো বাইক নিয়ে ট্যুর দেয়া উচিত না
2024-07-25

বাইকপ্রেমি বাইকারস যারা ট্যুর দিতে পছন্দ করে থাকেন, তারা অনেকেই রাতের বেলায় বাইক রাইড করে ট্যুর দিয়ে থাকেন, তবে হাইওয়েতে বেশিরভাগ রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো নেই, এছারা ও বিভিন্ন কারণে অনেকেই রাতে ট্যুর দিয়ে থাকেন, তবে বাংলাদেশের রাস্তা এবং সার্বিক সবকিছু বিবেচনা করে রাতে ট্যুর দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু বাধা বিপত...

Bangla English
কিভাবে বাইকের অপ্রয়োজনীয় সাউন্ড কমাবেন
2024-07-15

স্বাভাবিক ভাবে একটি বাইক চলন্ত অবস্থায় তার ইঞ্জিনের সাউন্ড বাইকের সাইলেন্সর দিয়ে বের হয়, এবং সাইলেন্সর দিয়ে বাইকের সাউন্ড কমানো হয়ে থাকে এবং সাউন্ড শুনতে ভালো লাগে, তবে বাইকের অন্যান্য যন্ত্রাংশ দিয়েও বিভিন্ন সাউন্ড আসতে পারে, ঠিক মতো পরিচর্যা না করার ফলে বাইকের বিভিন্ন অংশ থেকে এমন সাউন্ড হয়ে থাকে, ...

Bangla English
ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তনের সময় অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করবেন কি না
2024-07-14

একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর আমাদের বাইকের ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করতে হয়, আমরা নিকটস্থ সার্ভিস সেন্টার বা মেকানিকের কাছে গিয়ে থাকলে তারা ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করে দিয়ে থাকে, তবে অনেক ব্র্যান্ডের সার্ভিস সেন্টারে গেলে তারা ইঞ্জিন অয়েলের সাথে অয়েল ফিল্টার পরিবর্তন করার পরামর্শ দিয়ে থাকে, এতে করে আমাদের খরচ ...

Bangla English
Filter

Filter