ইলেকট্রিক মোটরসাইকেল কেন কিনবেন?
পৃথিবীতে জ্বালানির অন্যতম উৎস হিসেবে জ্বালানি তেল ব্যবহার করা হয়, সেটি ডিজেল/পেট্রোল বা যেটাই হোক। বিশেষকরে যানবাহনের এর ব্যবহার সর্বাধিক। জ্বালানি তেল ব্যবহারে নির্গত ধোয়া পৃথিবীর বায়ূমন্ডলে কার্বন মনো অক্সাইডের পরিমান বাড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে পৃথিবীর চারিদিকে আবৃত ওজনস্তর ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পৃথিবীতে একদিকে সুর্যের ক্ষতিকর রশ্মি প্রবেশ করছে, অন্যদিকে পৃথিবী দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। ফলে চারদিকেই জ্বালানি তেল ব্যবহারে আরো সতর্ক হওয়া বা তেল ব্যবহার কমানোর জন্য বলা হচ্ছে। আকাশের বিমান থেকে শুরু করে মাটির মোটরসাইকেল পর্যন্ত সব কিছুতেই এখন জ্বালানি হিসেবে বিদ্যুত ব্যবহার শুরু হয়েছে। পৃথিবীব্যাপী সকল যানবাহনই এখন বিদ্যুতচালিত করা হচ্ছে। বিশ্বের নামী দামী ব্রান্ডগুলো ইলেক্ট্রিক যানবাহন তৈরী শুরু করে দিয়েছে। আগামি কয়েক বছরের মধ্যেই ইলেক্ট্রিক বাহনের ব্যবহার ব্যপকভাবে শুরু হবে।
বাহন হিসেবে মোটরসাইকেল যতটা না একশহর থেকে আরেক শহরের যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করা হয়, তার থেকে বেশি ব্যবহার করা হয় শহরের মধ্যেই চলাচল বা গ্রামের মধ্যে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় মোটরসাইকেলগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত বাইক হলো ৫০সিসি থেকে ১২৫সিসি পর্যন্ত। অর্থাত সবগুলোই কমবেশি কমিউটার বাইক। শহর বা গ্রামে ব্যবহারের উপযোগী। আন্ত:জেলা প্রতিদিন যাতায়াতের জন্য বাইক গুলো উপযুক্ত নয়। বাইকগুলো প্রতিদিন ৪০-৬০কিমি রাইডের জন্য ভালো। আর একটি ইলেক্ট্রিক বাইক আপনাকে এক চার্জে ৬০-৮০কিমি পথ চলার সুযোগ দিবে।
ইলেক্ট্রিক বাইক কি?
এক কথায় বলতে গেলে সাধারন মোটরসাইকেল আর ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেলের মধ্যে পার্থক্য হলো জ্বালানি। সাধারন বাইক চালানোর জন্য ব্যবহার হয় পেট্রোল, আর ইলেক্ট্রিক বাইকে ব্যবহার হয় বিদ্যুত। সাধারন বাইকে পেট্রোল পুড়িয়ে শক্তি তৈরী করে সেই শক্তি দিয়ে বাইক চলে আর ইলেক্ট্রিক বাইকে বিদ্যুতের সাহায্যে মোটর ঘুরিয়ে সেই মোটরে বাইক চলে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ইলেক্ট্রিক বাইকের ব্যবহারের সম্ভবনা অনেক। প্রথম কারন হলো আমাদের প্রতিদিনের বাইক ব্যবহারের পরিমান কম যা একটি ইলেক্ট্রিক বাইক সহজেই পূরন করতে পারে। আমরা যেহেতু খরচের বিষয়টি সবার আগে মাথায় আনি, ইলেক্ট্রিক বাইকে তুলনামূলক কম খরচের। সব মিলিয়ে দেশে ইলেক্ট্রিক বাইকের সম্ভবনা অনেক। আর এটি ব্যবহারও লাভজনক। বিশেষ করে আমরা যারা শহর বা গ্রামে অল্প দুরুত্বের যাতায়াতে চলাচল করি তাদের জন্য ইলেক্ট্রিক বাইক হতে পারে আদর্শ বাহন।
ইলেক্ট্রিক বাইকের ভালো দিক
কম জ্বালানি খরচ: সাধারন বাইকের সাথে তুলনা করলে একটি ইলেক্ট্রিক বাইকে জ্বালানি খরচ খুবই কম। রক্ষনাবেক্ষন খরচ কম: একটি ইলেক্ট্রিক বাইক খুবই কম খরচে রক্ষনাবেক্ষন করা যায়, পার্টসের দামও তুলনামূলক অনেক কম।
পরিবেশ বান্ধব: ইলেক্ট্রিক বাইক পরিবেশ বান্ধব। যেহেতু কোন প্রকার জ্বালানি তেল ব্যবহার হয় না, তাই ক্ষতিকারক ধোয়া তৈরী করে না। বায়ূমন্ডল নিরাপদ থাকে। যাতায়াতে কোন শব্দ তৈরী করেনা বিধায় শব্দ দূষন হয়না।
সহজে ব্যবহার যোগ্য: ইলেক্ট্রিক বাইক ব্যবহার খুবই সহজ। আর তাই তরুনরা তো বটেই, বৃদ্ধ এবং নারীরাও সহজেই ব্যবহার করতে পারেন।
মূল্য কম: মূল্য বিষয়টি আসলে আপেক্ষিক। কেননা বাইকভেদে বা কোয়ালিটি ভেদে পরিবর্তণ হবেই। তবুও সাধারন বাইকের সাথে তুলনা করলে মূল্য কমই বলা যায়।
ইলেক্ট্রিক বাইকের খারাপ দিক
১. একটি নির্দিষ্ট সময় পরে ব্যাটারী পরিবর্তন করতে হয় তখন এক সাথে অনেক খরচ হয়ে যায়।
২. এই বাইক ব্যবহারে বেশি দূরে যাওয়া যায় না, কারন চার্জের সীমাবদ্ধতা। চার্জের সময়ও বেশি লাগে। সাধারন বাইকে যেমন পেট্রোল ঢেলেই স্টার্ট দিলাম। এখানে সে সুযোগ নেই। কয়েক ঘন্টা প্রয়োজন পূর্ন চার্জ হতে। ফলে জরুরী প্রয়োজনে সমস্যার কারন হয়ে দাড়ায়।আমাদের দেশে এখনও হা্ইওয়েতে চলার অনুমতি নাই।
সব দিক বিবেচনায় যারা শহর বা গ্রামে বাইক ব্যবহার করতে চান তারা ইলেক্ট্রিক বাইক ব্যবহার করতে পারেন। খরচে কম, ব্যবহারে সহজ এবং সবচেয়ে বড় কথা ইলেক্ট্রিক মোটরসাইকেল পরিবেশ বান্ধব।